ড্রোন হামলায় ৩ মার্কিন সেনা নিহত, প্রতিশোধের হুংকার বাইডেনের

জর্ডানে ড্রোন হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের তিন সেনা নিহত হয়েছেন। হামলায় আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৩৪ জন। সিরিয়া সীমান্তবর্তী জর্ডানের একটি সামরিক ঘাঁটিতে হওয়া এই ড্রোন হামলায় হতাহতের এই ঘটনা ঘটে।
এদিকে এই ড্রোন হামলায় ৩ মার্কিন সেনা নিহত হওয়ার পর প্রতিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। হামলার পর দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন।
সোমবার (২৯ জানুয়ারি) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি ও রয়টার্স।
এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রোববার জর্ডানে ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীর ড্রোন হামলায় তিন মার্কিন সেনা নিহত হওয়ার পর পাল্টা হামলা চালানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক এই প্রেসিডেন্ট এক বিবৃতিতে বলেছেন, কোনও সন্দেহ নেই – আমরা এক সময়ে এবং আমাদের পছন্দের পদ্ধতিতে (হামলার জন্য) দায়ী সকলকে জবাবদিহিতার আওতায় আনব।
বাইডেনের ভাষায়, ‘আমরা যে তিনজন আমেরিকান সেনা সদস্যকে হারিয়েছি তারা সর্বোচ্চ অর্থে দেশপ্রেমিক ছিলেন। এবং তাদের চূড়ান্ত আত্মত্যাগ আমাদের জাতি কখনোই ভুলবে না… আমরা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য তাদের প্রতিশ্রুতি বজায় রাখব। এবং কোন সন্দেহ নেই – আমরা এক সময়ে এবং আমাদের পছন্দের পদ্ধতিতে (হামলার জন্য) দায়ী সকলকে জবাবদিহিতার আওতায় আনব।’
রয়টার্স বলছে, জর্ডানে একটি ড্রোন হামলার পর তিন মার্কিন সেনা সদস্য নিহত এবং আরও ৩৪ জনের মতো আহত হয়েছেন বলে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা রোববার জানিয়েছেন। তারা এই হামলার জন্য ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীর সাথে যুক্তদের দায়ী করেছেন।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলা এবং গাজায় ইসরায়েলের বিধ্বংসী প্রতিশোধমূলক হামলার ফলে মধ্যপ্রাচ্যে যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছিল, এই হামলা সেই উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে দেবে। হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র এবং বিভিন্ন দেশের পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া সামনে এসেছে।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘জর্ডানে ইউএস মিলিটারি ইন্সটলেশনে ড্রোন হামলা এবং ৩ জন আমেরিকান সৈন্যের নিহত ও আরও অনেকের আহত হওয়ার এই ঘটনা আমেরিকার জন্য একটি ভয়ঙ্কর দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে… যুক্তরাষ্ট্রের ওপর এই নির্লজ্জ হামলা জো বাইডেনের দুর্বলতা এবং আত্মসমর্পণের আরেকটি ভয়ঙ্কর ও দুঃখজনক পরিণতি।’
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বলেছেন, ‘ইরান-সমর্থিত মিলিশিয়ারা মার্কিন বাহিনীর ওপর এই ক্রমাগত হামলার জন্য দায়ী এবং আমরা আমাদের পছন্দের সময় ও জায়গায় এই হামলার জবাব দেব।’
এদিকে মিসরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘জর্ডানের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলে এমন যেকোনও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে মিসর। একইসঙ্গে এই নাজুক পরিস্থিতিতে জর্ডানের সঙ্গে পূর্ণ সংহতি প্রকাশ করছে তারা… মিসর সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলা করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিচ্ছে এবং এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে সহিংসতা পরিহারের আহ্বান জানাচ্ছে।’
ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেছেন, ‘আমরা আমাদের মূল্যবোধ এবং একটি অভিন্ন শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়েছি। তাদের আত্মত্যাগ সর্বদা স্মরণ করা হবে। শান্তিতে থাকুন। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।’
উল্লেখ্য, গত ১৭ অক্টোবর থেকে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে ড্রোন হামলার কবলে পড়েছেন মার্কিন সেনারা। তবে এর আগে কেউ নিহত হননি। অবশ্য আগের হামলাগুলো হয়েছে ইরাক ও সিরিয়াতে।
হামাস ও ইসরায়েল যুদ্ধের শুরু থেকে যুক্তরাষ্ট্র বলে আসছে, তারা চায় না যুদ্ধ অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ুক। তবে জর্ডানে মার্কিন সেনাদের নিহত হওয়ার বিষয়টি মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতের গুরুতর বিষয় হয়ে উঠতে পারে বলে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

Spread the love

Leave a Reply

Specify Facebook App ID and Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Facebook Login to work

Specify Twitter Consumer Key and Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Twitter Login to work

Specify LinkedIn Client ID and Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for LinkedIn Login to work

Specify Youtube API Key in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Youtube Login to work

Specify Google Client ID and Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Google and Youtube Login to work

Specify Instagram App ID and Instagram App Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Instagram Login to work

Your email address will not be published. Required fields are marked *