ইন্দোনেশিয়া উপকূলে শতাধিক রোহিঙ্গা নিয়ে নৌকাডুবি

শতাধিক রোহিঙ্গা শরণার্থী ও তাদের সাহায্য করতে যাওয়া একটি মাছ ধরার নৌকা বুধবার ইন্দোনেশিয়ার জলসীমায় ডুবে গেছে। স্থানীয় জেলেরা জানিয়েছেন, সেখান থেকে ছয়জনকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং কয়েকজন স্রোতে ভেসে গেছে।
পশ্চিম আচেহর ঐতিহ্যবাহী মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের নন্দা ফেরদিয়ানিয়াহ বলেন, পশ্চিম আচেহর জেলেদের কাছ থেকে আমরা খবর পেয়েছি, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বহনকারী একটি নৌকা মেউলাবোর কাছে সাগরে ডুবে গেছে। স্থানীয় সময় সকাল ৮টার দিকে এক জেলে রোহিঙ্গাদের নৌকাডুবির দৃশ্য দেখতে পান। খবর এএফপির
তিনি বলেন, জেলেদের নৌকা তাদের কাছে আসতেই তারা সবাই নৌকায় উঠে পড়ে। তারা ওঠার সাথে সাথে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত মানুষ হওয়ায় জেলেদের নৌকাটিও ডুবে যায়।
রিজেন্সির জেলে সম্প্রদায়ের সেক্রেটারি জেনারেল পাওয়াং আমিরুদ্দিন এক বিবৃতিতে বলেন, পশ্চিম আচেহর কুয়ালা বুবন সৈকতে রোহিঙ্গাবাহী নৌকাটি ডুবে যায়।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, স্থানীয় জেলেদের কাছ থেকে পাওয়া খবরে বলা হয়েছে, একটি রোহিঙ্গাবাহী নৌকা ডুবে গেছে এবং তারা উলটে যাওয়া নৌকার হালে উঠে নিজেদের রক্ষা করেছে। আরও কয়েকজন প্রবল স্রোতে ভেসে গেছে। স্থানীয় জেলেরা এ পর্যন্ত ছয়জনকে উদ্ধার করেছে, চারজন নারী ও দুইজন পুরুষ।
স্থানীয় তল্লাশি ও উদ্ধার সংস্থা জানিয়েছে, উপকূল থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে রোহিঙ্গাবাহী নৌকাটিকে ডুবে যেতে দেখা গেছে। আমিরুদ্দিন বলেন, শরণার্থীরা বলেছে যে তারা মিয়ানমার থেকে এসেছিল এবং থাইল্যান্ডে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পরে তারা ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় আচেহ প্রদেশের দিকে যায়।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা বলেছে, তারা এই ঘটনায় গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। দশ-বিশ জনের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে’ উদ্ধার করা প্রয়োজন, তবে সঠিক সংখ্যাটি নিশিচত করতে পারেনি।
তল্লাশি ও উদ্ধার সংস্থা জানিয়েছে, বুধবার সন্ধ্যায় একটি দল নৌকায় করে প্রাদেশিক রাজধানী বান্দা আচেহ ত্যাগ করেছে এবং বৃহস্পতিবার রাত ১২টা ৪৫ মিনিটে তারা ডুবে যাওয়া এলাকায় পৌঁছাবে।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার হিসাব মতে, গত বছর অক্টোবরের পর থেকে দুই হাজার রোহিঙ্গা এসেছে। মিয়ানমারের এই ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা নির্যাতনের শিকার হয়ে গত এক বছরে যারা ইন্দোনেশিয়ায় পালিয়ে এসেছে, বিশেষ করে আচেহতে, এরা তাদেরই অংশ।
প্রতি বছর এপ্রিল থেকে নভেম্বর যখন সমুদ্র শান্ত থাকে, রোহিঙ্গারা কাঠের নৌকা চড়ে থাইল্যান্ড এবং মুসলিম-প্রধান বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া আর মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায়।
জাতিসংঘের হাই কমিশনার ফর রেফিউজিস (ইউএনএইচসিআর) জানুয়ারী মাসে জানায়, ২০২৩ সালে মিয়ানমার বা বাংলাদেশ থেকে পালানোর সময় যে ৫৬৯ জন রোহিঙ্গা মারা গিয়েছিলেন। এই সংখ্যা ২০১৪ সালের পর সর্বচ্চ।
কয়েক মাস ধরে রোহিঙ্গারা ইন্দোনেশিয়া আসছেন। ইউএনএইচসিআর বলছে, নভেম্বরের মাঝা-মাঝি থেকে জানুয়ারির শেষ পর্যন্ত ১,৭৫২ জন উদ্বাস্তু, যাদের বেশির ভাগ নারী ও শিশু, ইন্দোনেশিয়ার আচেহ এবং উত্তর সুমাত্রা প্রদেশে এসেছেন। ২০১৫ সালের পর এটাই এই মুসলিম-প্রধান দেশে সবচেয়ে বেশি আগমন।

Spread the love

Leave a Reply

Specify Facebook App ID and Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Facebook Login to work

Specify Twitter Consumer Key and Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Twitter Login to work

Specify LinkedIn Client ID and Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for LinkedIn Login to work

Specify Youtube API Key in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Youtube Login to work

Specify Google Client ID and Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Google and Youtube Login to work

Specify Instagram App ID and Instagram App Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Instagram Login to work

Your email address will not be published. Required fields are marked *