পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি) ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) অবমাননার মামলায় দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে জারি করা জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা স্থগিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ওই মামলার অভিযোগ গঠন আগামী ২ আগস্ট পর্যন্ত স্থগিত করেছে ইসিপি।
মঙ্গলবার অবমাননার এই মামলায় প্রথমবারের মতো কমিশনে হাজির হন ইমরান খান। পরে পিটিআই প্রধানের উপস্থিতিতে শুনানি শেষে মামলার অভিযোগ গঠন ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা স্থগিত করে কমিশন।
গত বছর দেশটির নির্বাচন কমিশন ও সিইসির বিরুদ্ধে অশালীন ভাষা ব্যবহারের অভিযোগে পিটিআই প্রধানসহ দলটির সাবেক মহাসচিব আসাদ উমর ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ফাওয়াদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে ইসিপি।
পরে ইসিপির সদস্য নিসার দুররানির নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনের বেঞ্চে হাজির হয়ে ইমরান খান ও অন্যদের অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য কয়েক দফায় নোটিশও পাঠানো হয়। কিন্তু পিটিআই নেতারা ইসিপির বেঞ্চে হাজির হননি। এর পরিবর্তে দেশটির উচ্চ আদালতে নির্বাচন আইন-২০১৭ এর ১০ ধারার আওতায় ইসিপির অবমাননার মামলা দায়েরের ক্ষমতা চ্যালেঞ্জ করেন পিটিআই নেতারা।
সোমবার পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ইসিপি। নির্বাচন কমিশনকে অবমাননার অভিযোগে দায়ের করা মামলার শুনানিতে ইমরান খান ধারাবাহিকভাবে অনুপস্থিত রয়েছেন। যে কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে ইমরানকে গ্রেপ্তার করে মঙ্গলবার নির্বাচনী এই সংস্থার সামনে হাজির করতে ইসলামাবাদ পুলিশের মহাপরিদর্শককে নির্দেশ দেয় ইসিপি।
চলতি বছরের শুরুর দিকে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন ইমরান খান ও পিটিআইয়ের অন্যান্য নেতাদের বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ইসিপিকে অনুমোদন দেয়। গত ২১ জুন নির্বাচন কমিশন ও সিইসিকে অবমাননার মামলায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। মামলার কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন পেলেও ইসিপিকে চূড়ান্ত রায় ঘোষণার ক্ষমতা দেয়নি দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।
দেশটির সংবাদমাধ্যম ডন বলছে, মঙ্গলবার শুনানির সময় ইমরান খান তার আইনজীবী শোয়েব শাহীনের সাথে ইসিপি বেঞ্চে হাজির হন। শুনানিতে ইসিপি বেঞ্চের একজন সদস্য বলেন, তারা এই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করতে চান।
পরে পিটিআই প্রধানের আইনজীবী নির্বাচন কমিশনের বেঞ্চের কাছে শুনানি পিছিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানান। মামলার নথিপত্র সংগ্রহের জন্য আরও সময়ের প্রয়োজন বলে জানান তিনি। জবাবে ইসিপি জানায়, ‘ফাইল ও মামলার নথিপত্র সংগ্রহের দায়িত্ব আপনার।’
পরবর্তীতে নির্বাচন কমিশন ইমরান খানের আইনজীবীর আবেদন গ্রহণ করে এবং মামলার অভিযোগ গঠন আগামী ২ আগস্ট পর্যন্ত স্থগিত করে। আদালতের পরবর্তী শুনানিতে ইমরান খানের উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য কমিশন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর আইনজীবীকে নির্দেশও দেয়।
শুনানির পর সাংবাদিকরা ইমরান খানের কাছে জানতে চান, তিনি কমিশনের কাছে ক্ষমা চাইবেন কি না। এ সময় পিটিআই প্রধান বলেন, ‘আপনি কি মনে করেন আমার ক্ষমা চাওয়া উচিত? আমি যখন কোনও ভুল করিনি, তখন কেন ক্ষমা চাইব?
যদিও গত ২০ জুলাই পিটিআইয়ের সাবেক নেতা ফাওয়াদ চৌধুরী তার বিরুদ্ধে নির্বাচনী সংস্থার দায়ের করা অবমাননার এই মামলায় ইসিপির কাছে ক্ষমা চান।