রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর এক বছরেরও বেশি সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পর প্রথমবারের মতো দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন এবং রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। বৃহস্পতিবার ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে মাত্র ১০ মিনিট বৈঠক করেছেন তারা।
বিশ্বের শিল্পোন্নত ১৯টি দেশ ও ইউরোপের দেশগুলোর আঞ্চলিক জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সমন্বয়ে গঠিত জোট গ্রুপ অব টোয়েন্টির (জি-২০) সম্মেলন শুরু হয়েছে নয়াদিল্লিতে। সেই সম্মেলনের বিরতির সময়েই চিরবৈরী দু’দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন।
সম্মেলনে যোগ দিতে ব্লিনকেনের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের যে দলটি গেছে, সেই দলের একজন সদস্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের একজন উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে বলেন, সংক্ষিপ্ত সেই বৈঠকে তিনটি প্রসঙ্গে কথা বলেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সেগুলো হলো— (ক) যুদ্ধের শেষ পর্যন্ত ইউক্রেনকে সহায়তা দিয়ে যাবে যুক্তরাষ্ট্র, (খ) পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তি নিউ স্টার্ট স্থগিত রাখার যে সিদ্ধান্ত রাশিয়া নিয়েছে, তা পুনর্বিবেচনা করতে হবে এবং (গ) রাশিয়ার কারাগারে বন্দি মার্কিন নাগরিক পল ওয়েলানকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।
ব্লিনকেনের এসব প্রসঙ্গের জবাবে ল্যাভরভ কী উত্তর দিয়েছেন— তা স্পষ্ট করে বলেননি ওই মার্কিন কর্মকর্তা, তবে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের এসব প্রস্তাব নিকট ভবিষ্যতে রাশিয়া মেনে নেবে—এমন কোনো আচরণ-অভিব্যাক্তি বা ইঙ্গিত রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে পরিলক্ষিত হয়নি।’
রাশিয়ার সংবাদমাধ্যমগুলো অবশ্য জানিয়েছে, সম্মেলনের অবসরে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে সৌজন্যমূলক কথাবার্তা হয়েছে— কোনো আলোচনা বা বৈঠক হয়নি।
এদিকে, জি ২০ সম্মেলনে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে আলোচনা ও জোট সদস্যদের যৌথ বিবৃতি দেওয়া হবে বলে আশা করা হয়েছিল; কিন্তু আলজাজিরার নয়াদিল্লি প্রতিনিধি পবনি মিত্তাল জানিয়েছেন, সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো এ ব্যাপারে ঐকমত্যে না পৌঁছাতে পারায় এ ব্যাপারে কোনো আলোচনা বা যৌথ বিবৃতি দেওয়া সম্ভব হয়নি জোটের সদস্যরাষ্ট্রগুলোর পক্ষে।