রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলো সম্পৃক্ত হওয়ায় পারমাণবিক যুদ্ধের ঝুঁকি বাড়ছে— শুক্রবার (৩১ মার্চ) এক টেলিভিশন ভাষণে এমন মন্তব্য করেছেন বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো।
এছাড়া তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ দরজায় কড়া নাড়ছে। আরেকটি বিশ্বযুদ্ধ এড়াতে রাশিয়া-ইউক্রেনকে অনতিবিলম্বে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। তবে লুকাশেঙ্কোর এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে রাশিয়া।
পারমাণবিক ও তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা প্রকাশ করে লুকাশেঙ্কো বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও এটির স্যাটেলাইটগুলোর (ইউরোপের মিত্র দেশ) কারণে ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধ শুরু হয়েছে…পারমাণবিক অস্ত্রসহ একটি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ দরজায় কড়া নাড়ছে।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘কোনো পূর্বশর্ত ছাড়া যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করতে হবে। আমাদের এখনই থামতে হবে… নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আগে। আমি ঝুঁকি নিয়ে.. যুদ্ধ বন্ধের কথা বলব…যুদ্ধবিরতির পরামর্শ দেব।’
বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আরও বলেছেন, ‘সকল আঞ্চলিক, পুনর্গঠন, নিরাপত্তা এবং অন্যান্য বিষয় আলোচনার টেবিলে নিষ্পত্তি হতে পারে, কোনো পূর্ব শর্ত ছাড়া।’
তবে লুকাশেঙ্কোর যুদ্ধ বন্ধের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রো পেসকোভ বলেছেন, ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা হলে রাশিয়া ‘বিশেষ সামরিক অভিযানের’ লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে না।
পেসকোভ আরও বলেছেন, বেলারুশের প্রেসিডেন্ট যেসব কথা বলেছেন সেগুলো তারা নোট করে রেখেছেন এবং আগামী সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট পুতিন এ ব্যাপারে লুকশেঙ্কোর সঙ্গে কথা বলবেন।
‘ইউক্রেনের ক্ষেত্রে, কোনো কিছুই পরিবর্তন হচ্ছে না, বিশেষ সামরিক অভিযান এখনো চলছে, কারণ লক্ষ্য অর্জনে এটি ছাড়া আমাদের আর কোনো উপায় নেই।’ বলেছেন পেসকোভ।
এছাড়া চীন যে ১২ দফার শান্তি প্রস্তাব দিয়েছে সেটির কিছু অংশ এখন ‘অবাস্তব’ বলেও মন্তব্য করেছেন পুতিনের মুখপাত্র। তার দাবি, ইউক্রেনের অনিচ্ছা— অথবা তাদের প্রভু ও নির্দেশদাতাদের— নির্দেশ অমান্য করার অক্ষমতার কারণে চীনের প্রস্তাবও মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।
পেসকোভ এমন বক্তব্যের মাধ্যমে মূলত ইঙ্গিত দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনকে কোনো ধরনের শান্তি আলোচনা ও যুদ্ধবিরতিতে রাজি না হতে নির্দেশ দিয়েছে।
এদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বেলারুশে টেকটিক্যাল পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনের যে ঘোষণা দিয়েছেন, সেটি নিয়েও কথা বলেছেন লুকাশেঙ্কো। তিনি বলেছেন, ‘এসব টেকটিক্যাল পারমাণবিক অস্ত্র বেলারুশকে পশ্চিমাদের হুমকি থেকে রক্ষা করবে।’