
মোদি পদবী নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের দায়ে আদালত থেকে দু’বছর কারাবাসের সাজা ঘোষণার পরদিনই ভারতের পার্লামেন্ট লোকসভার সদস্যপদ হারিয়েছেন বিরোধীদল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা রাহুল গান্ধী। আদালতের রায়কে আমলে নিয়ে শুক্রবার ভারতের পার্লামেন্ট লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা তার সদস্যপদ খারিজ করে দিয়েছেন।
লোকসভার স্পিকারের দপ্তর থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভারতীয় সংবিধানের ১০২(১)-ই অনুচ্ছেদ এবং জনপ্রতিনিধিত্ব আইন (১৯৫১)-র ৮ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ করা হল।
২০১৯ সালের নির্বাচনে কেরালার সংসদীয় আসন ওয়ানাড থেকে নির্বাচিত হয়ে পার্লামেন্টের টিকিট পেয়েছিলেন তিনি। তবে তার সদস্যপদ খারিজ হয়ে যাওয়ায় ওয়ানাড আসনে এখন আর কোনো এমপি নেই।
গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সচল রাখতে নির্দিষ্ট সময় পর ওয়ানড আসনে উপনির্বাচন হবে, কিন্তু তাতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না রাহুল। এমনকি, ২০২৩ সালের লোকসভা নির্বাচন ও তার পরবর্তী ২০২৭ সালের নির্বাচনেও দাঁড়াতে পারবেন না তিনি। কারণ, যে আইনের ভিত্তিতে তার সংসদ সদস্যপদ খারিজ করা হয়েছে— সেই জনপ্রতিনিধিত্ব আইন বলছে, ভারতের কোনো পার্লামেন্ট সদস্য বা বিধায়ক যদি দু’বছর বা তার বেশি কারাবাসের সাজা পান— সেক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবে তার সাংসদ বা বিধায়ক পদ চলে যাবে।
২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ের ওপর ভিত্তি করে জনপ্রতিনিধিত্ব আইন (১৯৫১) সংশোধন করা হয়। ঘটনাচক্রে, এক দশক আগে ওই রায় কার্যকর করার পথ প্রশস্ত করে দিয়েছিলেন রাহুল নিজেই।
জনপ্রতিনিধিত্ব আইনে আগে বলা ছিল, লোকসভার সদস্য-বিধায়ক দোষী সাব্যস্ত হলে তাতে স্থগিতাদেশ পাওয়ার জন্য তিন মাস সময় পাবেন। ২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় সরকার বনাম লিলি টমাস মামলায় আইনের সেই ধারাটি নাকচ করে রায় দেন—দু’বছরের কারাদণ্ডের সাজার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলেই পার্লামেন্ট সদস্য-বিধায়ক পদ চলে যাবে। তারপর জনপ্রতিনিধিত্ব আইনেও সংশোধন আনা হয়।