অং সান সু চিকে কারাগার থেকে মুক্তি দিয়ে গৃহবন্দি করেছে ক্ষমতাসীন জান্তা

মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চিকে কারাগার থেকে মুক্তি দিয়ে গৃহবন্দি করেছে ক্ষমতাসীন জান্তা। তাকে রাজধানী নেইপিদোর একটি সরকারি বাসভবনে স্থানান্তর করা হয়েছে বলে সোমবার বিবিসি বার্মিজকে নিশ্চিত করেছে সু চি যে কারাগারে বন্দি ছিলেন, সেখানকার একটি সূত্র।

কারাগার সূত্র জানিয়েছে, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে গ্রেপ্তারের পর মে মাস পর্যন্ত সু চিকে গৃহবন্দি অবস্থায় রাখা হয়েছিল। তারপর জুন মাসে তাকে একটি কারাগারে পাঠানো হয়। কারা সূত্রের তথ্য অনুসারে, সোমবার কারাগার থেকে ফের সু চিকে গৃহবন্দি করা হয়েছে।

২০২০ সালের জাতীয় নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) সরকারকে হটিয়ে জাতীয় ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং সেই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন।

ক্ষমতা দখলের পর এনএলডি’র প্রেসিডেন্ট অং সান সু চিসহ তার দলের শীর্ষ ও মধ্যমসারির বহু নেতা-কর্মীকে কারাবন্দি করে সরকার। সু চিকে অবশ্য আলাদা একটি বিশেষ কারাগারে বন্দি রাখা হয়েছিল।

প্রায় আড়াই বছর সেই কারাগারে বন্দি ছিলেন শান্তিতে নোবেলজয়ী ৭৮ বছর বয়সী এই গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী। এই আড়াই বছরে সু চির বিরুদ্ধে দুর্নীতিসংক্রান্ত বেশ কিছু অভিযোগ এনেছে জান্তা। রাজধানীর একটি সামরিক আদালতে সেসব অভিযোগের বিচার চলছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি মামলার রায় দিয়েছেন সামরিক আদালত। সেসব রায়ে সু চিকে ৩৩ বছর কারাবাসের সাজা দেওয়া হয়েছে।

জান্তার কঠোর নজরদারির কারণে সু চি কেমন আছেন— বা তার সম্পর্কিত কোনো তথ্য জানার কোনো উপায় ছিল না। কেবল আদালতে শুনানির দিন কারাগার থেকে তাকে বের করা হতো এবং নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার মাধ্যমে নিয়ে যাওয়া হতো আদালতে।

এই পরিস্থিতিতে একদিকে মিয়ামারের অভ্যন্তরে জান্তাবিরোধী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠীগুলোর তৎপরতা বৃদ্ধি পেতে থাকে, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বন্ধুহীন হয়ে পড়ে মিয়ানমার। ফলে ভেতর এবং বাইরে— উভয়দিকেই চাপে পড়ে জান্তা।

জান্তার ওপর চাপসৃষ্টিতে কার্যকর ভূমিকা রেখেছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর আঞ্চলিক জোট আসিয়ান। মিয়ানমার এই জোটের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য।

এর মধ্যে গত জুনে প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে সু চির মুক্তি দাবি করেন তার ছেলে কিম অ্যারিস। গত ২৩ জুন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী কিম সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, মিয়ানমারে মায়ের বন্দিদশা নিয়ে তিনি খুবই উদ্বিগ্ন এবং সেনাবাহিনী তার মা সম্পর্কিত কোনো তথ্য দিচ্ছে না।

তারপর গত ১৫ জুলাই থাই পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডন প্রমোদউইনাই জানান, গত ৯ জুলাই কারাগারে সুচির সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং বৈঠক করেছেন তিনি। তিনি আরও জানান, মিয়ানমারের কারাবন্দি এই নেত্রী শারীরিকভাবে সুস্থ রয়েছেন।

Spread the love

Leave a Reply

Specify Facebook App ID and Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Facebook Login to work

Specify Twitter Consumer Key and Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Twitter Login to work

Specify LinkedIn Client ID and Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for LinkedIn Login to work

Specify Youtube API Key in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Youtube Login to work

Specify Google Client ID and Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Google and Youtube Login to work

Specify Instagram App ID and Instagram App Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Instagram Login to work

Your email address will not be published. Required fields are marked *