পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি চিকিৎসক ও ইন্টার্নদের আন্দোলনে সহমর্মিতা জানিয়ে দ্রুততম সময়ে মধ্যে তাদের দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। তিনি বলেন, আমিও চাই না, আমার কোনো ডাক্তার রাস্তায় নেমে এভাবে আসুক। যত দ্রুত তোমাদের এই সমস্যা সমাধান করা যায়, আমি দেখব।
শনিবার (২৩ মার্চ) শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করলে মন্ত্রী তাদের এসব কথা বলেন।
আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের উদ্দেশে ডা. সামন্ত লাল সেন বলন, ‘আমার কাছে খুব খারাপ লাগল তোমরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছো। আমিও চাই না, আমার কোনো ডাক্তার এভাবে রাস্তায় নেমে আসুক। তোমরা বাধ্য হয়েই তো আসছো। ডাক্তারদের সম্পর্কে আমি ভালো করে জানি, আমি গ্রাম থেকে উঠে আসছি। সুতরাং যত দ্রুত তোমাদের এই সমস্যা সমাধান করা যায়, আমি দেখব। এইটুকু আমি তোমাদের কথা দিলাম।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে চিকিৎসা ব্যবস্থা ও হাসপাতালের মূল তোমরা। তোমরা যদি ভালো করে কাজ না করো, তাহলে কাজ হবে না। সমস্ত সুনাম-দুর্নাম তোমাদের ওপর। তোমরা ছাড়া আমি উন্নতি করতে পারব না। আমি তোমাদের দাবি দেখব এবং তোমাদের দাবি যৌক্তিক।’
এসময় উপস্থিত স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. খুরশীদ আলম বলেন, ‘আমাদের সময় কোনো ভাতা ছিল না। তোমাদের জন্য আমরাই ভাতা চালু করেছি। স্যার যেহেতু কথা দিয়েছেন, এ সমস্যার সমাধান হবে। তোমরা এইটুকু আস্থা রেখ।’
জবাবে আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা বলেন, ‘আমাদের এর আগেও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। আমাদের ভাতাটা বন্ধ করে দিল কেন স্যার, আমরা নিরুপায় হয়ে আপনাদের কাছে এসেছি।’
এর আগে টানা কয়েক দিন ধরে বকেয়া ভাতার দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি চিকিৎসকরা। গত ১৬ মার্চ বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান অ্যান্ড সার্জনস (বিসিপিএস) ভবনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। আন্দোলনরত চিকিৎসকরা জানান, প্রতি মাসে ২৫ হাজার টাকা করে ছয় মাসে দেড় লাখ টাকা ভাতা দেওয়া কথা। এর আগে ২০ হাজার করে যখন ভাতা ছিল তখন ছয় মাস পরপর এক লাখ ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হতো। এ হিসেবে জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসের টাকা জানুয়ারির শুরুতে দেওয়ার কথা। কিন্তু মার্চের অর্ধেক পেরিয়ে গেলেও ভাতা দিতে নানাভাবে টালবাহানা করা হচ্ছে। নিয়মিত যদি ভাতা না পাই তাহলে আমরা কীভাবে চলব, আর পরিবার কীভাবে চলবে।
স্বাস্থ্য পেশাদারদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করতে আগ্রহী ডব্লিউএইচও
পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের চার দফা দাবি হলো-
১. ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বেতন ৩০ হাজার টাকা এবং পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি চিকিৎসকদের বেতন বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করতে হবে।
২. পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি চিকিৎসকদের (এফসিপিএস, রেসিডেন্ট ও নন রেসিডেন্ট) বকেয়া ভাতা প্রদান করতে হবে।
৩. ১২টি প্রাইভেট ইনস্টিটিউটের নন-রেসিডেন্ট ও রেসিডেন্টদের আকস্মিক ভাতা বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে ভাতা পুনর্বহাল করতে হবে।
৪. অবিলম্বে চিকিৎসক সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করতে হবে।