বান্দরবানে সৎ মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে আপুই মং মারমা (৬৮) নামের এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে তাকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড আনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
বুধবার (২৭ মার্চ) সকালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল বান্দরবানের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ বিচারক জেবুন্নাহার আয়শা এ আদেশ দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আপুই মং মারমা (৬৮) রোয়াংছড়ি উপজেলার ১ নং সদর ইউপির ২ নম্বর ওয়ার্ড থোয়াই অংগ্য পাড়ার মৃত সাপ্রু অং মার্মার ছেলে।
আদালত সূত্রে জানাযায়, মেসাচিং মার্মা’র(৫৪) প্রথম স্বামী মারা যাবার পর প্রায় ১৭ বছর আগে আপুই মং মারমা’র (৬৫) সাথে বিবাহ হয়। প্রথম সংসারে দুই মেয়ে ও তিনজন ছেলে ছিল। দ্বিতীয় বিয়ের পর প্রথম পক্ষের ৩ বছর বয়সী ছোট মেয়েকে নিয়ে আপুই মং মার্মার সঙ্গে বসবাস করে আসছিলেন মেসাচিং মার্মা।
২০২০ সালে মেসাচিং মার্মা অসুস্থ হলে ছোট মেয়েকে রেখে রাঙ্গামাটির রাজস্থলী এলাকায় তার প্রথম সংসারের বড় মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে তিন মাসের মত ছিলেন। ফিরে আসলে তার স্বামী আপুই মং মারমা তাকে ঝগড়া-ঝাটি করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন।
এরপর ২০২১ সালের ২ জুলাই ছোট মেয়েটি নবজাতক এক কন্যা শিশু নিয়ে বড় ভাইয়ের বাড়িতে আসলে বিষয়টি জানাজানি হয়। সে সময় ধর্ষণের শিকার মেয়েটি তার ভাইকে জানায় তার মা চলে যাবার পর থেকে ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত তার সৎ বাবা আপুই মং মারমা তাকে নির্জন বাগান বাড়িতে নিয়ে গিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে অসংখ্য বার তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করেন। যার ফলে কন্যা শিশুটির জন্ম হয়। পরে ধর্ষণের শিকার মেয়েটির মা বাদি হয়ে ২০২১ সালের ৮ জুলাই রোয়াংছড়ি থানায় আপুই মং মারমা’র বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন।
দীর্ঘ সময়ে ধরে সাক্ষ্যপ্রমাণ গ্রহণ শেষে আদালত আজ এ রায় দেন।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) বাসিংথুয়াই মারমা জানান, ধর্ষণ মামলায় আপুই মং মারমাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া আদালতের নির্দেশে দণ্ড প্রাপ্ত আপুই মং মারমাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।