বিএনপি বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের মধ্যে গোলমাল পাকিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আপনারাই (বিএনপি) তো খালেদা জিয়াকে রাজনীতিতে নিষিদ্ধ করেছেন, রাজনীতি থেকে বিতাড়িত করেছেন। তাকে বাদ দিয়ে তারেক রহমানকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করেছেন কেন? মা বেটার মধ্যে গোলমাল পাকানোর জন্য? মতলব পরিষ্কার। মা বেটার মধ্যে সমস্যা সৃষ্টি করেছেন আপনারা। আমরা করিনি।
বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের ৫৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকির সভাপতিত্ব অনুষ্ঠানে আন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দলের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া ও মহিলা বিষয়ক সম্পাদক জাহানারা বেগম। আলোচনা সভাটি পরিচালনা করেন দলের সাধারণ সম্পাদক শবনম জাহান শিলা। এ সময় সর্বস্তরের নেতীকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
‘খালেদা জিয়াকে নিয়ে আওয়ামী লীগের কেন এত মাথাব্যথা?’ বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের উত্তরে ওবায়দুল কাদের বলেন, ফখরুল সাহেব, তাহলে খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে তারেক রহমানকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কেন করলেন? মা-বেটার মধ্যে সমস্যা তো আপনারাই তৈরি করেছেন। চেয়ারম্যান কে ছিল? চেয়ারপারসন কে ছিল? তাকে বাদ দিয়েছে আওয়ামী লীগ? শেখ হাসিনা? কে বাদ দিয়েছে? বিএনপি।
বিএনপির গঠনতন্ত্রের কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, তাদের (বিএনপি) গঠনতন্ত্রের সপ্তম ধারাতেই আছে- কোনো দণ্ডিত ব্যক্তি বিএনপি নেতা হতে পারবে না। দণ্ডিত বলেই আপনারা খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়েছেন। তারপর আরেকজনকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দিলেন তিনিও দণ্ডিত। তিনি পলাতক, টেমস নদীর পাড়ে পালিয়ে গেছেন। মুসলেখা দিয়ে গেছেন। তিনি আপনাদের (মির্জা ফখরুল) নেতা, তাই মাথা ব্যথা আপনাদের। আমাদের কোনো মাথা ব্যথা নাই। খালেদা জিয়া রাজনীতি করলে আমাদের কি? আদালত যদি তাকে নির্বাচন করতে দেয় আমাদের কি? এতে আমাদের কিছু যায় আসে যায় না।
‘সুষ্ঠু নির্বাচন দিলে আওয়ামী লীগের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে তাই তো ভয়’ বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যে জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির নেতাদের কথা শুনে মানুষও হাসে, মনে হয় ঘোড়াও হাসে।
তিনি বলেন, জনপ্রিয়তা বুঝাতে হলে নির্বাচনে আসতে হবে। আর নির্বাচনে হলে কী হবে সেটা বুঝতে দরকার নির্বাচন। তা না হলে কীভাবে প্রমাণ করবেন আপনি বিজয়ী না আমরা বিজয়ী। তাহলে কীভাবে প্রমাণ করবেন কার জামানত বাজেয়াপ্ত। বড় বড় কথা বলবেন না। এদেশে ১০০ বছরেও শেখ হাসিনা ক্ষমতা আসতে পারবে না এই দম্ভোক্তি করেছিলেন আপনার নেত্রী। তিনি এখন কোথায় আর শেখ হাসিনা কোথায়। ফখরুল সাহেব বেগম জিয়াকে নিয়ে, তার অসুস্থতা নিয়ে, কত রাজনীতি করছেন। প্রতিদিনই মনে হতো এই বুঝি বেগম জিয়া নেই। তারা এমনভাবে অপপ্রচার করেছে যে, এই বুঝি বেগম জিয়া নেই।
মহিলা আওয়ামী লীগের কমিটি দ্রুত করার পরাপর্শ দিয়ে তিনি বলেন, শিগগিরই নতুন পুরোনোদের সমন্বয়ে একটি ভালো কমিটি দেখতে পাব। এক্ষেত্রে বসন্তের কোকিলদের পদ না দিয়ে ত্যাগীদের মূল্যায়ন করতে হবে।
সাহস নিয়ে মহিলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের রাজনীতিতে থাকার পরামর্শ দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, কে কি বলল সেটাকে পাত্তা দেবেন না।