সংসদে পাস হয়েছে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা বিল-২০২৩। সরকারি চাকরিজীবী ছাড়াও দেশের সর্বস্তরের জনগণকে টেকসই পেনশন কাঠামোয় আনতে মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) বিলটি পাস হয়েছে জাতীয় সংসদে। এর আগে, গত ৮ জানুয়ারি বিলটি পরীক্ষা করে জাতীয় সংসদে প্রতিবেদন জমা দেয় অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। এ দিন কমিটির সভাপতি আবুল হাসান মাহমুদ আলী বিলটি পাসের সুপারিশ করে প্রতিবেদন সংসদে উপস্থাপন করেন।
এর আগে গত ২৯ আগস্ট অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জাতীয় সংসদে তোলেন সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা বিল ২০২৩। মূলত, সবার জন্য পেনশন চালু করার বিষয়টি আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিরই অংশ। সংসদে উত্থাপনের পর বিলটি বিরোধী দলের একাধিক সংসদ সদস্যের দ্বারা প্রশংসিতও হয়েছে। বলা হয়েছে, এই পেনশন ব্যবস্থা ব্যাংকের ডিপিএস স্কিমের মতো। তবে বিলটিকে সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক বলেও দাবি করেছেন কোনো কোনো এমপি।
সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা বিল-২০২৩’ অনুযায়ী, জাতীয় পরিচয়পত্রের ভিত্তিতে ১৮ বছর বা তার বেশি বয়স থেকে ৫০ বছর বয়সী সব বাংলাদেশি নাগরিক এই পেনশন ব্যবস্থায় অংশ নিতে পারবেন। তবে বিশেষ বিবেচনায় পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিদেরও এর আওতায় রাখার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বিলে। চাঁদা দাতার বয়স ৬০ বছর পূর্তিতে পেনশন তহবিলে পুঞ্জিভূত মুনাফাসহ জমার বিপরীতে পেনশন দেয়া হবে। একজন পেনশনার আজীবন পেনশন সুবিধা পাবেন। সরকার গেজেট জারি করে বাধ্যতামূলক না করা পর্যন্ত এই পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণ হবে ঐচ্ছিক।
তবে পেনশনে থাকাকালে কোনো ব্যক্তি ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে মারা গেলে তার নমিনি অবশিষ্ট সময়ের জন্য (মূল পেনশনারের বয়স ৭৫ বছর পর্যন্ত) মাসিক পেনশন প্রাপ্য হবেন। চাঁদাদাতা কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দেয়ার আগে মারা গেলে জমাকৃত অর্থ মুনাফাসহ তার নমিনিকে ফেরত দেয়া হবে।
বিলে আরও বলা আছে, মাসিক পেনশন সুবিধার জন্য পেনশন ব্যবস্থাপনায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর, চাঁদা দাতাকে ধারাবাহিকভাবে কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দিতে হবে। এ পেনশন ব্যবস্থায় অংশ নিতে পারবেন বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশিরাও। তবে চাঁদার হার এখনও নির্ধারিত হয়নি। আইন হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ চাঁদার হার কত হবে তা নির্ধারণ করবেন।