পটুয়াখালীর চরাঞ্চলের তরমুজ চাষিরা তরমুজ চাষ করতে গিয়ে ঋণে জর্জরিত 

পটুয়াখালীর চরাঞ্চলের তরমুজের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে। তবে এখানকার তরমুজ চাষিরা তরমুজ চাষ করতে গিয়ে ঋণে জর্জরিত হয়ে পড়ছেন। তরমুজ বিক্রি শেষে ঋণ পরিশোধ করতে করতে সামান্য লাভ নিয়ে ঘরে ফিরছেন। আবার অনেক তরমুজ চাষি ঋণ পরিশোধ করতে না পেরে জমি অথবা স্ত্রীর গহনা বিক্রি করে পাওনাদারের টাকা পরিশোধ করছেন। 

জানা গেছে, বেলে-দোআঁশ মাটি তরমুজ চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় পটুয়াখালীতে তরমুজ ভালো হয়। মৌসুমী এই ফল নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন এখানকার চাষিরা। কিন্তু মনে শান্তি নেই চাষিদের। দিন যত যাচ্ছে পাওনাদারের টাকা যেন পাহাড় সমান হচ্ছে। জমি প্রস্তুত করার সময় টাকা ধার নেওয়া থেকে শুরু হয় বীজ কেনা, পরিচর্যা করা, সার কেনা, শ্রমিকের বেতন, আবার বিক্রির জন্য দূর-দূরান্তের বাজারে পরিবহনে করে নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত টাকা ধার করেন তরমুজ চাষিরা। এজন্য স্থানীয় মহাজন অথবা বিভিন্ন এনজিও থেকে চড়া সুদে ঋণ নেন। আবার অনেকে ফলনের তিন ভাগের দুই ভাগ চুক্তিতে তরমুজ চাষ করেছেন। তবে বিগত বছরের চেয়ে এবার তরমুজের বীজ, সার এবং কীটনাশকের দাম বেড়েছে কয়েক গুণ বেশি। পাশাপাশি ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণে জমি চাষে বেশি খরচ হচ্ছে। এর ফলে এবার তরমুজের উৎপাদন খরচ বেড়েছে, কৃষকের মাথায় ঋণের পরিমাণও বাড়ছে।

কলাপাড়া উপজেলার বালিয়াতলী গ্রামের খাদিজা বেগম বলেন, ‘অনেক টাকা লোন করে সুদে এনে তারপরে এই তরমুজের খামারটা চালাইতেছি। এখনো ১৫ থেকে ২০ দিন লাগবে তরমুজ উঠতে, এখনো ৫০ হাজার টাকা লাগবে ওষুধ ও সার কিনতে। একজনের কাছে ১০ হাজার টাকা সুদে টাকা পেয়েছি আর কোনো টাকা পাইনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিভিন্ন জনকে সুদ দেওয়ার পর আমার লাভ থাকে কোথায়। আমার নিজের জমি নেই। তাই এই জমি রাখছি ৫০ হাজার টাকা দিয়ে। লোন নিয়ে বীজ কিনছি, সার কিনছি, তারপর দোকান থেকেও ৫০ হাজার টাকার মালামাল ধারে আনছি।’

গলাচিপার তরমুজ চাষি, ‘ধার করে যদি চাষ করি তাহলে লাভ বেশি থাকে না, যদি নিজের নগদ টাকা দিয়ে চাষ করা যায় তাহলে লাভ ভালো হয়। পরের টাকা দিয়ে চাষ করলে খরচা বেশি হয়। এ বছর আমি দুই কানি জমিতে তরমুজ চাষ দিছি, প্রতি কানিতে দুই লাখ টাকা করে খরচ গেছে। এবার ফলন কিছু জায়গায় ভালো হয়েছে, আবার কিছু জায়গায় একদম খারাপ হয়েছে।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, কিছু কিছু চাষি গ্রামের মহাজনদের কাছ থেকে নগদ‌ টাকা ধার করে তরমুজ চাষ করেছেন। এই সব চাষির লাভের পরিমাণ খুবই কম হয়ে থাকে। কারণ চড়া সুদে ঋণ নিয়ে সেই সুদের টাকা পরিশোধ করতে হয়। তাদের জন্য পরামর্শ আপনারা সরকারি সংস্থার কাছে আসেন আপনাদের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন ব্যাংকে ৫০০ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছেন। আপনারা স্বল্প সুদে এখান থেকে ঋণ নিতে পারবেন। বর্তমান সরকার কৃষিবান্ধব সরকার।

Spread the love

Leave a Reply

Specify Facebook App ID and Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Facebook Login to work

Specify Twitter Consumer Key and Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Twitter Login to work

Specify LinkedIn Client ID and Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for LinkedIn Login to work

Specify Youtube API Key in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Youtube Login to work

Specify Google Client ID and Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Google and Youtube Login to work

Specify Instagram App ID and Instagram App Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Instagram Login to work

Your email address will not be published. Required fields are marked *