আড়ংয়ের বিল পেমেন্টে কাস্টমারকে দীর্ঘ লাইনে যেন অপেক্ষা করতে না হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।
বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) কারওয়ান বাজার ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সভাকক্ষে আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের তৈরি পোশাক, কাপড় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। সেমিনারে আড়ংয়ের পক্ষ থেকে আসা প্রতিনিধিকে উদ্দেশ্য করে তিনি এ কথা বলেন।
মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ধরেন আপনাদের ৫টা কাউন্টার আছে, দেখা যাচ্ছে সেখানে ৩ বন্ধ। বাকি দুটোতে লম্বা কিউ। দেখা যাচ্ছে একজন ক্রেতার কিনতে লাগছে ১০/২০ মিনিট কিন্তু সেটার বিল পেমেন্ট করতে এসেই লম্বা লাইনে তার অনেক সময় চলে যাচ্ছে। এটা খুবই দুঃখজনক।
প্রতিষ্ঠানটির প্রতিনিধিকে উদ্দেশ্যে করে সফিকুজ্জামান বলেন, আপনার এতো সেল হচ্ছে, আপনি ম্যানপাওয়ার বাড়ান। একজন কাস্টমার হিসেবে আমি কেন বিল পেমেন্টের জন্য লম্বা কিউতে দাঁড়িয়ে থাকবো? একটা পণ্য কিনে পেমেন্ট দিতে কেন আধাঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে? তাই পেমেন্ট করার জন্য আপনাদের বুথ সংখ্যা আরও বাড়ানো দরকার।
মহাপরিচালক আলোচনায় বলেন, অনেক সময় দেখা যায় পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে কিছু বিক্রয়কারী আমাদের দেশে এসে বাসা ভাড়া নিয়ে ভেতরে ভেতরে টার্গেট কাস্টমারের কাছে বিদেশি কাপড় বিক্রয় করছে। এই ধরনের কার্যক্রম দেশীয় ফ্যাশন হাউজ গুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এক্ষেত্রে তথ্যগুলো আমাদের কাছে দেওয়া হলে আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আমরা চাই সবাই আইন মেনে ব্যবসা করুক এবং ভোক্তারা যেন ন্যায্য মূল্যে পণ্য পায়। শপিংমল গুলোতে অনিয়ম পেলে মার্কেট কমিটিকে দায়ী করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সভায় মহাপরিচালক বলেন, বিদেশি পোশাক ও কসমেটিক্সের ক্ষেত্রে আমদানিকারকের নাম ও সিল থাকতে হবে এবং এমআরপি আমদানিকারক কর্তৃক দিতে হবে। নকল পণ্যের বিষয়েও তিনি ব্যবসায়ীদের সতর্ক করেন এবং এক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান।
সভায় ঈদ উপলক্ষ্যে একই পোশাকের দাম অন্যান্য সময়ের তুলনায় বাড়িয়ে দেওয়া, একটি পোশাকে বিভিন্ন দামের প্রাইজ ট্যাগ লাগানো, সিট কাপড়ের ক্ষেত্রে মিটারের পরিবর্তে গজের ব্যবহার, মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করা, আসল বলে নকল কাপড় বিক্রি করা ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
এছাড়া রেডিমেড গার্মেন্টসের ক্ষেত্রে মোড়কের গায়ে এমআরপি না লেখা, এমআরপি ঘষামাজা, কাটাকাটি করে বেশি মূল্য নির্ধারণ করা, পুরাতন মূল্যের ওপর নতুন স্টিকার লাগিয়ে বেশি মূল্য নেওয়া, শতভাগ কটন ঘোষণা দিয়ে শতভাগ কটন না দেওয়া, কাটা ফাটা পোশাক বিক্রি করা এবং সময়মত এক্সচেঞ্জ করে না দেওয়া, ভোক্তাদের পেমেন্টের ক্ষেত্রে লম্বা লাইনে অপেক্ষমান না রাখা ইত্যাদি বিষয়েও আলোচনা করা হয়।
সভায় বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা ছাড়াও আড়ং, আর্টিসান, অঞ্জনস, টপ টেন, লুবনান, নগরদোলা, রং বাংলাদেশ ব্র্যান্ডসহ বিভিন্ন কাপড়ের ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পক্ষে পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ারসহ অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিভিন্ন কাপড়ের ব্র্যান্ডের প্রতিষ্ঠান থেকে আগত প্রতিনিধিরা সভার আলোচনা থেকে প্রাপ্ত নির্দেশনা অনুসরণ করে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করবেন বলে জানান।