স্পট মার্কেট থেকে কেনা এলএনজি সরবরাহ শুরু হয়েছে পাইপলাইনে। এর ফলে সঞ্চালন লাইনে বেড়েছে গ্যাসের সরবরাহ। বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) জাহাজ থেকে এলএনজি আনলোড শেষ হয়। এর আগে বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) থেকে আনলোড শুরু হয়েছিল।
দীর্ঘমেয়াদী চুক্তি না করে চাহিদা অনুযায়ী টেন্ডারের মাধ্যমে সরকার যে এলএনজি কেনে সেটাকেই স্পট মার্কেট বলা হয়।সিঙ্গাপুরের স্পট মার্কেট থেকে কেনা ৬০ মেট্রিক টন এলএনজি দেশে আনা হয়েছে জাহাজে করে। রবিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) আরও এক কার্গো এলএনজি আসবে। তবে সেটা দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির অধীনে। এছাড়া আগামী ১১ মার্চ আবার স্পট থেকে আনা কার্গো ভিড়বে বাংলাদেশের বন্দরে। পর পর কয়েকটি কার্গো আসার কারণে সঞ্চালন লাইনে গ্যাসের সরবরাহ বাড়বে। ইতোমধ্যে সরবরাহ বাড়ানো শুরু হয়েছে।
পেট্রোবাংলা সূত্র বলছে, গত সপ্তাহের শেষে এলএনজি সরবরাহের পরিমাণ ছিল সাড়ে ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুটের কাছাকাছি। দুদিন আগেও যা সাড়ে ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট ছিল।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি সঞ্চালন লাইনে এলএনজি সরবরাহ হয়েছে ৪৪৪ মিলিয়ন ঘনফুট, ২০ ফেব্রুয়ারিতে ৪৯০, ২১ ফেব্রুয়ারি ৫২৯ এবং ২২ ফেব্রুয়ারিতে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৫৪৭ মিলিয়ন ঘনফুটে।
শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৬১ মিলিয়ন ঘনফুটে, এলএনজি সরবরাহ শুরু হলেও চাহিদা কম থাকায় এখন সরবরাহ কম করা হচ্ছে। রবিবার থেকে এই গ্যাসের সরবরাহ আরও বাড়ানো হবে বলে জানা গেছে।
জ্বালানি বিভাগ, পেট্রোবাংলা এবং রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানির (আরপিজিসিএল) এলএনজি ডিভিশনের মহাব্যবস্থাপক ইঞ্জিনিয়ার শাহ আলম বলেন, বৃহস্পতিবার আনলোড হওয়া জাহাজটিতে ৬০ মেট্রিক টন এলএনজি ছিল। যা ৩০০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সমান। স্পট মার্কেট থেকে পরবর্তী কার্গো আসবে ১১ মার্চ। অন্য কার্গোগুলো আসার শিডিউল এখনও ঠিক হয়নি।
পেট্রোবাংলা জানায়, স্পট মার্কেট থেকে ৮ কার্গো এলএনজি আমদানি করা হবে। যা দিয়ে গ্রীষ্মের চাহিদা মেটানো হবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে এলএনজি আমদানি শুরু করে বাংলাদেশ। ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল কাতারের রাস গ্যাস প্রথম এলএনজি কার্গো সরবরাহ করে। ২০১৯ সালের ৩১ জানুয়ারি কার্গো আসে ওমান থেকেও। দেশীয় কোম্পানি সামিট এলএনজি ও যুক্তরাষ্ট্রের এক্সেলারেট এনার্জির স্থাপন করা ভাসমান টার্মিনালের (এফএসআরইউ) মাধ্যমে আমদানি করা এলএনজি সরবরাহ করা হচ্ছে। এরপর ২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর খোলাবাজার থেকেও এলএনজি আমদানি শুরু করা হয়।
ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দাম বেড়ে যাওয়ায় গত বছরের শেষ দিকে সরকার স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি বন্ধ করে দিলে দেশে জ্বালানি সংকট দেখা দেয়। এতে বিদ্যুতে শিডিউল লোডশেডিং করা হয়। সরকারের তরফ থেকে এক ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের কথা বলা হলেও প্রকৃত লোডশেডিং তার চাইতে বেশি হয়েছে। এবার আবারও গ্রীষ্মে লোডশেডিংয়ের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। ফলে বিদ্যুত উৎপাদনে গ্যাস সরবরাহ ঠিক রাখতে আবারও স্পট মার্কেটের এলএনজি কেনার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এখন স্পট মার্কেটের এলএনজির দামও কমে আসছে।