ভারতের এশিয়া কাপ জয়

আসর শুরুর আগের দিন স্কোয়াড ঘোষণা করেছিল শ্রীলঙ্কা। কারণ একাধিক ক্রিকেটারের চোট। বলা যায়, দ্বিতীয় সারির দল নিয়েই আসর শুরু করেছিল লঙ্কানরা। কিন্তু সময় যত গড়িয়েছে ততই অবাক করেছেন তারা। সেটা মাঠের পারফরম্যান্স দিয়ে। অথচ ফাইনালের বড় মঞ্চে এসে পুরো অচেনা দাসুন শানাকার দল। ঘরের মাঠে খেলতে নেমে মোহাম্মদ সিরাজের সুইং আর পেসে রীতিমতো ছেড়ে দে মা, কেঁদে বাঁচি দশা। ফলে কোনো রকম প্রতিদ্বন্দ্বীতা ছাড়াই চার বছর পর এশিয়া কাপের শিরোপা পুনরুদ্ধার করল ভারত। এটি তাদের অষ্টম ট্রফি।

কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নেমে লঙ্কানরা খেলতে পেরেছে কেবল ৯২ বল। এই সময়ে সবকটি উইকেট হারিয়ে তারা স্কোরবোর্ডে তুলতে পেরেছে ৫০ রান। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১৭ রান এসেছে কুশল মেন্ডিসের ব্যাট থেকে। দলের ৯ ব্যাটারই এদিন দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি।

ভারতের হয়ে ২১ রানে ৬ উইকেট শিকার করে সেরা বোলার মোহাম্মদ সিরাজ। ৫১ রানের জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৬ ওভার ১ বলেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ভারত।

ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে উড়ন্ত শুরু পায় ভারত। শুভমান গিল ও ঈশান কিষাণের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে মোটে ৩৭ বল খেলেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ভারত। ঈশান অপরাজিত ছিলেন ১৮ বলে ২৩ রান করে। আর গিল ২৭ রান করে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছেন। 

এর আগে টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুর ওভারেই ধাক্কা খায় লঙ্কানরা। জাসপ্রিত বুমরাহর বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন লঙ্কান ওপেনার কুশল পেরেরা। রানের খাতা খুলতেই পারেননি তিনি। এরপরের গল্পটা কেবল ভারতীয় পেসার মোহাম্মদ সিরাজের।  শ্রীলঙ্কা ব্যাটিং অর্ডারে ধস নামান তিনি।

ক্যারিয়ারে প্রথমবার ওয়ানডেতে পাঁচ উইকেট শিকারের পর রোনালদোর সিউ উদযাপন করেন সিরাজ।

ইনিংসের চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে পাথুম নিশাঙ্কাকে ফিরিয়ে শুরু করেন সিরাজ। জাদেজার দুর্দান্ত ক্যাচে এই ওপেনার আটকা পড়েছেন ২ রান করে। দ্বিতীয় বল ডট হয়েছে। তবে এর পরের বলে সাদেরা সামাবিক্রমাকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেছেন সিরাজ। এই ইনফর্ম ব্যাটার রিভিউ নিয়েছিলেন তবে শেষ রক্ষা হয়নি। চতুর্থ বলে আবারও উইকেট। এবার তার শিকারে পরিণত হয়েছেন চারিথ আসালঙ্কা। 

প্রথম চার বলে ৩ উইকেট নেয়ার পর পঞ্চম বলটি ছিল হ্যাটট্রিক ডেলিভারী। সেটিতে দারুণ এক শটে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ইনিংস শুরু করেন ধানাঞ্জয়া ডি সিলভা। কিন্তু পরের বলেই তিনি উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন। ফলে এক ওভারেই ৪ উইকেট পেয়েছেন সিরাজ।

নিজের তৃতীয় ওভারে আক্রমণে এসে আবারও উইকেট পেয়েছেন। চতুর্থ বলে বোল্ড করেছেন দাসুন শানাকাকে। ফলে নিজের করা ১৬ বলে মধ্যেই ৫ উইকেট পেয়েছেন তিনি। বল বাই বল ডেটা যখন থেকে রাখা হচ্ছে, তাতে চামিন্দা ভাসের রেকর্ড ছুঁলেন সিরাজ। ভাস ১৬তম বলে পঞ্চম উইকেটটি নিয়েছিলেন ২০০৩ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে। সেবার ভালোবাসা দিবসের ম্যাচে প্রথম ওভারেই বাংলাদেশের ৪ উইকেট নিয়েছিলেন ভাস। 

ফাইফার নিয়েই থেমে থাকেননি সিরাজ। এরপর ইনিংসের ১২তম ওভারে এসে কুশল মেন্ডিসকে ফিরিয়েছেন তিনি। সবমিলিয়ে ৭ ওভারে ২১ রানে ৬ উইকেট নিয়েছেন এই পেসার। 

সিরাজের আগুন ঝড়ানোর দিনে জ্বলে উঠেছিলেন হার্দিক পান্ডিয়াও। তার ঝুলিতে গেছে ৩ উইকেট। তাছাড়া জাসপ্রিত বুমরাহ পেয়েছেন এক উইকেট। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

শ্রীলঙ্কা: ১৫.২ ওভারে ৫০ (নিশাঙ্কা ২, পেরেরা ০, মেন্ডিস ১৭, সামাবিক্রমা ০, আসালাঙ্কা ০, ধানাঞ্জয়া ৪, শানাকা ০, ওয়েল্লালাগে ৮, হেমন্থ ১৩*, মাদুশান ১, পাথিরানা ০; বুমরাহ ৫-১-২৩-১, সিরাজ ৭-১-২১-৬, পান্ডিয়া ২.২-০-৩-৩, কুলদিপ ১-০-১-০)

ভারত: ৬.১ ওভারে ৫১/০ (কিষাণ ২৩*, গিল ২৭*; মাদুশান ২-০-২১-০, পাথিরানা ২-০-২১-০, ওয়েল্লালাগে ২-০-৭-০, আসালাঙ্কা ০.১-০-১-০)

ফল: ১০ উইকেটের জয়ে এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন ভারত

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মোহাম্মদ সিরাজ

ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট: কুলদীপ যাদব

Spread the love

Leave a Reply

Specify Facebook App ID and Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Facebook Login to work

Specify Twitter Consumer Key and Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Twitter Login to work

Specify LinkedIn Client ID and Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for LinkedIn Login to work

Specify Youtube API Key in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Youtube Login to work

Specify Google Client ID and Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Google and Youtube Login to work

Specify Instagram App ID and Instagram App Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Instagram Login to work

Your email address will not be published. Required fields are marked *