গত কয়েক দশকের মধ্যে ভয়াবহতম ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় হাজার হাজার শিশু নিহত হয়েছে এবং কোনো না কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৭০ লাখেরও বেশি শিশু। মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক অঙ্গসংস্থা ইউনিসেফের মুখপাত্র জেমস এলডার।
সুইজারল্যান্ডের রাজধানী জেনেভায় ইউনিসেফের সদর দপ্তরে আয়োজিত সেই সংবাদ সম্মেলনে জেমস এলডার বলেন, ‘সাম্প্রতিক ভয়াবহ ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় হাজার হাজার শিশুর মৃত্যু হয়েছে; কিন্তু আমাদের আশঙ্কা, তাদের অনেকের নাম হয়তো সরকারি নিহতের তালিকায় নথিভুক্ত হয়নি।’
‘নিহতের সংখ্যা ভবিষ্যতে আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা আছে। এর বাইরে তুরস্কে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অন্তত ৪৬ লাখ শিশু। সিরিয়ায় এই সংখ্যা অন্তত ২৫ লাখ।’
জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত এই শিশুদের একটি অংশ শারীরিকভাবে আহত। এর বাইরে গৃহহীন, ক্ষুধার্ত ও শীতার্ত অবস্থায় দিন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছে লাখ লাখ শিশু; বিপুলসংখ্যক শিশু হারিয়েছে তাদের মা-বাবা ও পরিবারের অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনকে।
৬ ফেব্রুয়ারি সোমবার স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে তুরস্ক ও তার প্রতিবেশী দেশ সিরিয়া। ওই ভূমিকম্পের ১৫ মিনিট পর ৬ দশমিক ৭ মাত্রার আরও একটি বড় ভূমিকম্প এবং পরে অনেকগুলো আফটারশক হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের তাৎক্ষণিক এক বিবৃতিতে বলা হয়, তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় কাহরামানমারাশ প্রদেশের গাজিয়ানতেপ শহরের কাছে ভূপৃষ্ঠের ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার গভীরে ছিল ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল।
ভূমিকম্পে ইতোমধ্যে দু’দেশে নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়িয়ে গেছে, আহত হয়েছেন দেড় লাখেরও বেশি মানুষ।
‘হাজার হাজার শিশু তীব্র শীতের মধ্যে সড়ক, স্কুল, মসজিদ, বাসস্টেশন এমনকি সেতুর নিচেও রাত কাটাতে বাধ্য হচ্ছে। তাদের খাদ্য নেই, আশ্রয় নেই। আমরা এখানে থেকে যতখানি আশঙ্কা করছি, বাস্তবে সেখানকার পরিস্থিতি আরও কয়েকগুণ খারাপ,’ সংবাদ সম্মেলনে বলেন জেমস এলডার।