গ্রেপ্তার এড়াতে আদালতে আবেদন করেছিলেন ইমরান খান, নাকচ করলেন আদালত

আলোচিত তোশাখানা মামলায় গ্রেপ্তার এড়াতে ইসলামাবাদের এফ-৮ করাচি আদালতে যে আবেদন করেছিলেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান বিরোধীদলীয় নেতা ইমরান খান, সোমবার তা নাকচ করে দিয়েছেন আদালত।

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি এই মামলায় পাকিস্তানের বিরোধী দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খানের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন এফ-৮ করাচি সেশন জজ আদালত। আদালত এই পরোয়ানা জারির পর তাতে স্থগিতাদেশ চেয়ে ওই দিনই আবেদন করেন ইমরান খানের আইনজীবীরা।

সোমবার সেই আবেদনের ওপর শুনানি ছিল। শুনানিতে আসামি ও বাদিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে ওই আবেদন খারিজ করে দেন আদালতের অ্যাডিশনাল সেশন জজ জাফর ইকবাল।

শুনানির সময় ওই আদালতে ইমরানের আইনজীবী প্যানেলের তিন সদস্যই উপস্থিত ছিলেন। এরা হলেন আলী বুখারি, কায়সার ইমাম এবং গোহার আলী খান। শুনানিতে আদালতকে আইনজীবীরা বলেন, তাদের মক্কেল সবসময়ই আদালতের সিদ্ধান্তকে সর্বোচ্চ মর্যাদা দিয়েছেন; সুতরাং তার বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির কোনো প্রয়োজন নেই।

জবাবে বিচারক বলেন, তার আদালতে এই পরোয়ানায় স্থগিতাদেশ দেওয়া হবে না; যদি ইমরান খান স্থগিতাদেশ চান— সেক্ষেত্রে হাইকোর্টে আবেদন করতে হবে।

তোশাখানা মামলা

গত শতকের সত্তরের দশকে পাকিস্তানের সরকারি একটি বিভাগ হিসেবে তোশাখানা প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই বিভাগটি প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, আইনপ্রণেতা, সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধান ও অন্যান্য বিশিষ্ট জনদের দেওয়া উপহার জমা রাখে।

তোশাখানার নিয়ম অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট, মন্ত্রী, আইনপ্রণেতা বা সরকারের পদস্থ কর্মকর্তাদের পাওয়া সব উপহার অবশ্যই এই বিভাগে জমা দিতে হবে। যারা এসব উপহার পেয়েছেন তারা পরে এগুলো কিনে নিতে পারবেন। কিনে নেওয়ার পর এসব উপহার বিক্রির বিষয়টি অবৈধ না হলেও অনেকেই এটিকে অনৈতিক বা নীতিগতভাবে ভুল বলে মনে করেন।

ইমরানের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ দায়ের করা হয় তাতে বলা হয়েছে, ক্ষমতায় থাকাকালে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন জিনিসের ৫৮টি বাক্স উপহার হিসেবে পেয়েছিলেন।

গত অগাস্টে পাকিস্তানে ক্ষমতাসীন জোট সরকারের সবচেয়ে বড় শরিক দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ- নওয়াজের (পিএমএলএন) সদস্য মোহসিন নওয়াজ রানঝা ইমরানের বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করেছিলেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছিল, সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় তোষাখানা থেকে বিদেশি বিশিষ্টজনদের দেওয়া উপহার কিনলেও নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া সম্পদ বিবরণীতে সেগুলোর উল্লেখ করেননি।

এ সম্পর্কে গত ২২ আগস্ট পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির স্পিকার রাজা পারভেজ আশরাফ ‍নির্বাচনক কমিশনকে দেওয়া এক চিঠিতে ইমরান খানকে ‘অসৎ’ ঘোষণা করে তাকে রাজনীতিতে নিষিদ্ধ করার আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান নিজের ক্ষমতা ব্যবহারের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় তোশাখানা থেকে নামমাত্র মূল্যে এসব উপহার নিয়েছেন এবং এসব উপহারের অধিকাংশই তিনি বিক্রি করেছেন।

উপহারের মধ্যে কিছু দামি হাতঘড়িও রয়েছে। এসব উপহারের আনুমানিক মূল্য ১৪ কোটি ২০ লাখ রুপি। প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকালে ২০১৮ সালের আগস্ট থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর নাগাদ ইমরান খান এসব উপহার গ্রহণ করেছিলেন বলে আবেদনপত্রে উল্লেখ করেন স্পিকার।

Spread the love

Leave a Reply

Specify Facebook App ID and Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Facebook Login to work

Specify Twitter Consumer Key and Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Twitter Login to work

Specify LinkedIn Client ID and Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for LinkedIn Login to work

Specify Youtube API Key in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Youtube Login to work

Specify Google Client ID and Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Google and Youtube Login to work

Specify Instagram App ID and Instagram App Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Instagram Login to work

Your email address will not be published. Required fields are marked *