
শিখদের ঘোষিত রাষ্ট্র খালিস্তানের পক্ষে তৎপরতা চালানোর অভিযোগে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল দিল্লিসহ ৬ রাজ্যের ৫৩টি এলাকায় অভিযান চালিয়েছে সন্ত্রাস দমন সংক্রান্ত ভারতের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষায়িত শাখা ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেটিভ এজেন্সি (এনআইএ)।
দিল্লি ব্যাতীত অন্যান্য যেসব রাজ্য ও রাজধানী শহরে অভিযান চালানো হয়েছে, সেগুলো হলো হলো পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, উত্তরাখণ্ড এবং পাঞ্চাব-হরিয়ানার রাজধানী শহর চন্ডিগড়।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে এনআইএ জানিয়েছে, ৫৩ এলাকার অভিযান থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে আগ্নেয়ায়স্ত্র,
তবে কতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে— তার সঠিক সংখ্যা জানায়নি এনআইএ।
সম্প্রতি কানাডার নাগরিক ও সেখানকার খালিস্তানপন্থী শিখদের নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যাকাণ্ড নিয়ে ব্যাপক টানাপোড়েন শুরু হয়েছে ভারত ও কানাডার মধ্যে। গত ১৮ জুন কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রদেশের রাজধানী ভ্যানকুভারে একটি গুরুদুয়ারার (শিখ ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয়) সামনে আততায়ীর গুলিতে নিহত হন হরদীপ। কানাডার অভিযোগ— এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ভারত সংশ্লিষ্ট; কারণ ১৯৭৭ সালে ভারতের পাঞ্জাবের জলন্ধর থেকে কানাডায় গিয়ে স্থায়ী হওয়া হরদীপ ভারতের একজন তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ছিলেন। তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারে মুখোমুখী করতেও আগ্রহী ছিল ভারত।
প্রসঙ্গত, খালিস্তানপন্থী দুই রাজনৈতিক সংগঠন খালিস্তান টাইগার ফোর্স এবং শিখস ফর জাস্টিস কানাডা শাখার নেতা ছিলেন হরদীপ। এই দু’টি সংস্থা ভারতে নিষিদ্ধ হলেও কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে বেশ শক্তিশালী।
ভারত বরাবরই অভিযোগ করে আসছে— পশ্চিমা দেশগুলোর উদার গণতান্ত্রিকতার সুযোগ নিয়ে প্রবাসী খালিস্তানপন্থী শিখরা নিজেদের সংগঠিত করছে এবং সেসব দেশে বসে ভারতে বিচ্ছিন্নতাবাদী বিভিন্ন নেটওয়ার্ক চালাচ্ছে।
তবে কানাডার সাম্প্রতিক অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছে নয়াদিল্লি। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে গুপ্তহত্যা’ ভারতের বর্তমান সরকারের নীতির সঙ্গে একেবারেই ‘যায় না’।
দুই দেশের এই টানাপোড়েনের মধ্যেই বৃহস্পতিবার শিখস ফর জাস্টিসের যুক্তরাষ্ট্র শাখার নেতা গুরপতওয়ান্ত সিং পান্নু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) পোস্ট করা এক বার্তায় হরদীপ হত্যার প্রতিশোধ নিতে বিশ্বকাপ ক্রিকেটে নাশকতার হুমকি দেন।
তার এই হুমকির পরই এই বিশেষ অভিযান পরিচালনা করল ভারত।