আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিাল কোর্ট- আইসিসি) রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির ৩ দিনের মধ্যে আইসিসির বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করেছে দেশটির সর্বোচ্চ তদন্ত সংস্থা।
পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আইনজীবী ও বিচারকদের মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে। স্থানীয় সময় সোমবার এক বিবৃতিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে তদন্ত সংস্থা।
ইউক্রেনের ‘অধিকৃত বিভিন্ন অঞ্চল’ থেকে ১ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি শিশুকে রাশিয়ায় পাচারের অভিযোগে শনিবার পুতিন এবং রাশিয়ার শিশু বিষয়ক কমিশনের কমিশনার মারিয়া লেভোভা-বেলোভার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আইসিসি।
প্রায় ১৩ মাস আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নেতৃত্বাধীন সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে এই শিশু পাচারের অভিযোগ জানিয়েছিল। সেই অভিযোগ আমলে নিয়েই পরোয়না জারি করেছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত।
নেদারল্যান্ডের হেগ শহরে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতকে স্বীকৃতি দেয়নি রাশিয়া। ফলে, রাশিয়ার ভেতরে এই পরোয়ানা কার্যকর হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। আবার আইসিসির হাতে বিচারিক ও পরোয়ানা জারির ক্ষমতা থাকলেও কোনো অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা নেই। আইসিসির সদস্যভূক্ত কোনো দেশ যদি পুতিন সফরে যান এবং সেই দেশের সরকার যদি পরোয়ানা আমলে নিয়ে পুতিনকে গ্রেপ্তার করে, কেবল তাহলেই তাকে হেগ শহরে আইসিসির এজলাসে হাজির করা সম্ভব হবে।
আইসিসি বিচারিক ক্ষমতাও শুধু সেসব দেশে প্রয়োগ করতে পারে, যে দেশগুলো এই আদালত গঠন করতে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল। চুক্তিটি রোম সংবিধি নামে পরিচিত। রাশিয়া এই সংবিধিতে স্বাক্ষর করেনি। তবে আইসিসির কোনো সদস্যরাষ্ট্র পুতিনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠাবে— এমন কোনো সম্ভাবনা নেই।
পরোয়ানা জারির পরপরই সেটিকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন রুশ কর্মকর্তারা। এমনকি গ্রেপ্তারি পরোয়ানাকে ‘টয়লেট পেপারের’ বলেও উল্লেখ করেছিলেন তারা।
সোমবার রাশিয়ার তদন্ত সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘জাতিসংঘের ১৯৭৩ সালের কনভেনশন অনুযায়ী— রাষ্ট্রপ্রধান চুড়ান্ত দায়মুক্তির অধিকারী। যে অভিযোগ রাশিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানের বিরুদ্ধে তোলা হয়েছে— তারও কোনো সাক্ষ্য-প্রমাণ হাজির করতে পারেনি আইসিসি।’
‘এটা মূলত আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে রাশিয়াকে হেয় প্রতিপন্ন করার একটি প্রচেষ্টা এবং রুশ আইন অনুযায়ী, কাউকে হেয় প্রতিপন্ন করা একটি অপরাধ। এ কারণেই আইসিসির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।’
আইসিসির প্রসিকিউটর ও ব্রিটিশ আইনজীবী করিম আহমেদ খান, বিচারক তোমোকো আকানে, বিচারক রোসারিও সালভাতোরে এবং বিচারক সের্গিও গেরার্ডো উগাল্ডে গোডিনেজকে এই মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে।