‘সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩’-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সোমবার (২৮ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
পরে বিকেলে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন এ তথ্য জানান।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এ আইনের খসড়া এর আগের সভায় অনুমোদন করা হয়েছিল। সেটির পরিপ্রেক্ষিতে আজ চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আমাদের নীতিগত যে ড্রাফট করা হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী সেখানে সামান্য দু-একটি সংজ্ঞা এবং সামান্য পরিমার্জন করে দিয়েছেন। এরপর এটি চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, এখানে অজামিনযোগ্য হলো মাত্র চারটি ধারা। সেগুলো হলো— ১৭, ১৯, ২৭ এবং ৩৩ নম্বর ধারা। বাকিগুলো জামিনযোগ্য।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোতে বেআইনি প্রবেশ (ধারা-১৭), কম্পিউটার ও কম্পিউটার সিস্টেমে ইত্যাদির ক্ষতি সাধন (ধারা-১৯), সাইবার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সংগঠনের অপরাধ (ধারা-২৭), হ্যাকিং সংক্রান্ত অপরাধ (ধারা-৩৩)- এগুলো অজামিনযোগ্য রাখা হয়েছে।
নতুন আইন হলে আগের আইনের মামলাগুলোর বিষয়ে কী হবে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, আইনের রহিতকরণ একটা ধারা থাকে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮’ এর অধীনে অনিষ্পন্ন মামলা সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালে এবং অনুরূপ মামলায় প্রদত্ত আদেশ, রায় বা শাস্তির বিরুদ্ধে আপিল সংশ্লিষ্ট আপিল ট্রাইব্যুনালে এমনভাবে পরিচালিত ও নিষ্পত্তি হবে যেন ওই আইন রহিত হয়নি। ওই অংশটুকু আগের আইনেই চলবে সেটিই বলা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, নতুন আইন কার্যকর হওয়ার আগ পর্যন্ত আগের আইনের যেসব কার্যক্রম ছিল ওই আইনে সেগুলো নিষ্পন্ন হবে।
খসড়া চূড়ান্তের ক্ষেত্রে স্টেক হোল্ডারদের কোনো মতামত নেওয়া হয়েছে কি না- জানতে চাইলে মাহবুব হোসেন বলেন, এটা আপনি ওই মন্ত্রণালয়কে (তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ) জিজ্ঞাসা করলে ভালো হবে। আমাদের কাছে খসড়াটা চলে আসে, প্রসেসটা আমাদের কাছে আসে না। খসড়া আইনে জরিমানার ক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তন আসেনি বলেও জানান মাহবুব হোসেন।
এর আগে গত ৭ আগস্ট বহুল আলোচিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ পরিবর্তন করে নতুন এ খসড়া আইনের নীতিগত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। এটির নাম দেয়া হয় ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩।’
সেদিন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পরিবর্তিত হয়ে সাইবার নিরাপত্তা আইন হয়েছে। তবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মধ্যে যেসব ধারা ছিল, সেসব ধারা রেখেই সাইবার নিরাপত্তা আইন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার জনগণের সরকার। সেজন্য আমরা সেটাকে যেসব মিসইউজ এবং অ্যাবিউজ হয়, সেগুলো বন্ধ করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি আইনের মাধ্যমে।
তিনি আরও বলেন, এখানে বহু ধারা সংশোধন হয়েছে। এটার আজকে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল নয়, পরিবর্তন হচ্ছে।