ডেলিভারির রোগী বেসরকারি ক্লিনিক-হাসপাতালে গেলেই সিজার করিয়ে দেওয়া হয়: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

বেসরকারি ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতালগুলোর কারণে দেশে সি-সেকশন (সিজারিয়ান সেকশন) নিয়ন্ত্রণে আসছে না বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, ডেলিভারির রোগী বেসরকারি ক্লিনিক-হাসপাতালে গেলেই সিজার করিয়ে দেওয়া হয়, যদিও বেশিরভাগই অপ্রয়োজনীয়। এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক হতে হবে।

বুধবার (২ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন হলে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে এখন সি-সেকশনের হার ৭০ শতাংশ। বেসরকারি ক্লিনিক-হাসপাতালগুলোতে গেলেই সি-সেকশন করে দেওয়া হয়। এগুলো আমাদের নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। আমাদের দেশে এখনো ইনস্টিটিউশনাল ডেলিভারি অনেক কম। গ্রামাঞ্চলে ধাত্রীদের মাধ্যমে অসংখ্য ডেলিভারি হয়, যে কারণে এখনও মাতৃ ও শিশুমৃত্যু শূন্যের কোঠায় আনা যাচ্ছে না। তবে আমরা সেগুলো নিয়ে কাজ করছি।

জাহিদ মালেক বলেন, আমরা প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারির সময়সীমা বাড়িয়েছি। আগে হাসপাতালে আট ঘণ্টা ডেলিভারি ছিলো, সেটাকে এখন ২৪ ঘণ্টায় নিয়ে এসেছি। এতে করে আশা করছি প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারি আরও বাড়বে।

মন্ত্রী বলেন, আমরা পরিবার পরিকল্পনায় ভালো কাজ করছি। দেশের যত অর্জন এর পেছনে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের অবদান বেশি। তাদের কারণেই ভ্যাকসিন হিরো অ্যাওয়ার্ড এসেছে, শিশু মৃত্যুর হার কমে এসেছে। তাদের কারণেই টিএফআর কমে এসেছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে আমাদের পপুলেশন গ্রোথ ১ দশমিক ২ শতাংশে আছে, যা পূর্বে ৩ শতাংশ ছিল। পপুলেশন আমাদের জন্য বোঝা নয়। আমাদের পপুলেশন আছে বলেই বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ। ইয়ং পপুলেশনকে লেখাপড়া, সুস্বাস্থ্য এবং তাদের কর্মসংস্থানে গুরুত্ব দিতে হবে।

নারীরা প্রতিটি ক্ষেত্রেই এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, নারীরা এখন ব্যাপক হারে পুলিশে-আর্মিতে চাকরি করছে। আইনজীবী হচ্ছে। বর্তমানে নারীরা সমাজে একটা অবস্থান তৈরি করে নিয়েছে। এটা প্রধানমন্ত্রী করে দিয়েছেন। অর্থনীতিতে নারীদের জন্য একটা সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত হয়েছে। নারীরা ব্যবসায় ভালো করছে। গার্মেন্টসগুলোতে অধিকাংশই নারী। তারা দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে।

তিনি আরও বলেন, রাজনীতিতেও এখন নারীরা ভালো করছে। দেশের প্রধানমন্ত্রী নারী, বিরোধী দলের নেতা নারী, স্পিকারসহ বড় বড় জায়গাগুলোতে সবাই নারী। উপজেলা, ইউনিয়ন পরিষদে নারীদের জন্য কোটা দেওয়া হয়েছে। এসবের মাধ্যমে দেশে নারী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।

জাহিদ মালেক বলেন, নারী ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে চাইলে তাদের আর্থিক সক্ষমতা তৈরি করতে হবে। তবে নারী ক্ষমতায়নে কিছু সমস্যাও আছে। দেশে এখনও ১৫ থেকে ২০ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে। সে জায়গাগুলোতে নারী ক্ষমতায়ন উপেক্ষিত হচ্ছে। বাল্যবিবাহ এখনও দেশে আছে। অল্প বয়সের একটা মেয়ের বিয়ের মাধ্যমে তার লেখাপড়া ও কর্মক্ষমতা নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে। এসব বিষয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে হবে।

Spread the love

Leave a Reply

Specify Facebook App ID and Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Facebook Login to work

Specify Twitter Consumer Key and Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Twitter Login to work

Specify LinkedIn Client ID and Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for LinkedIn Login to work

Specify Youtube API Key in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Youtube Login to work

Specify Google Client ID and Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Google and Youtube Login to work

Specify Instagram App ID and Instagram App Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Instagram Login to work

Your email address will not be published. Required fields are marked *