তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, দুর্নীতির টাকা পাচারের কারণে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার শাস্তি হয়েছে। লুটের টাকা বিদেশে পাচার করার কারণে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আমেরিকার এফবিআই এসে বাংলাদেশে সাক্ষী দিয়ে গেছে। দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়ে বিএনপি বিশ্ব চোরের উপাধি অর্জন করেছিল। সেই বিএনপি যখন দুর্নীতির অভিযোগ করে, তখন শুধু মানুষ নয় গাধাও হাসে, হনুমানও ভেংচি কাটে।
মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) আয়োজিত ২১ দিনব্যাপী অমর একুশে বই মেলার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বই পোড়ানো যেমন অপরাধ, বই না পড়াও অপরাধ। বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে বই বিতরণ প্রথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চালু করেছেন। গত এক যুগের বেশি সময় ধরে প্রতি বছর ৩৫ কোটির বেশি বই বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশের মতো জনবহুল আর কোনো দেশে এমন ব্যবস্থা চালু নেই।
তিনি বলেন, আপনাদের মনে থাকার কথা ২০১৪ সালে স্কুল ঘরে নতুন বই সংরক্ষিত ছিল। সেই বইয়ের মধ্যে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পাঁচশ স্কুলঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছিল। নির্বাচন প্রতিহতের নামে এ কাজটি করেছে বিএনপি এবং তার নেতৃত্বাধীন জোট। শিক্ষার্থীদের বই নয়, তাদের ভবিষ্যৎ পুড়িয়ে দিয়েছে। সেই পোড়া বই বুকে জড়িয়ে ধরে শিক্ষার্থীরা আহাজারি করেছে। রাজনীতির নামে বই পোড়ানো এমন ঘটনা পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে ঘটেছে কিনা সন্দেহ আছে।
তিনি আরও বলেন, এমন সময় ছিল যখন দরিদ্র অভিভাবকরা অবস্থা-সম্পন্ন পরিবারের কাছে ধর্না দিত তার ছেলের পুরনো বইগুলো সংগ্রহ করার জন্য। সে ঘটনা এখনো পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে আছে। কিন্তু আমাদের দেশে শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে নতুন বই প্রদান প্রথা চালু করেছেন।
দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের বক্তব্যের ব্যাপারে হাছান মাহমুদ বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং করোনা মহামারির কারণে আজকে সমগ্র পৃথিবীতে দ্রব্যমূল্য বেড়েছে। আমাদের দেশের মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশ, যা পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম।
মন্ত্রী বলেন, বই পড়ার অভ্যাসটা কেড়ে নিয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও মোবাইল ফোনের আসক্তি। বিষয়টি বড় যন্ত্রণা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেখা যায় ছাত্র-ছাত্রীরা বই পড়ার চেয়েও মোবাইল ফোনেই মগ্ন থাকতে পছন্দ করে। এখান থেকে আমাদের কিশোর-তরুণদের রক্ষা করতে হবে। বই পড়ার ওপর জোড় দিতে হবে। না হয় আমরা ভবিষ্যতে এমন একটি প্রজন্ম পাব, যেই প্রজন্ম হয়ত প্রযুক্তিতে অনেক সমৃদ্ধ হবে, কিন্তু জ্ঞানে সমৃদ্ধ হবে না। সেজন্য বইমেলার আয়োজন এবং মানুষের বই পড়ার অভ্যাস পুনরুদ্ধার করা অত্যন্ত প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চসিক মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম চৌধুরী। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত গুণীজন অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা এমপি, বইমেলা উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক চসিকের কাউন্সিলর ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু ও চসিকের প্রধান নির্বাহী শেখ মো. তৌহিদুল ইসলাম।