বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদের পার্লামেন্ট মেম্বার্স ক্লাবের এলডি হলে এ ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠান শুরু হয় সকাল সাড়ে ১০টায়।
ঢাকার ব্রিটিশ হাইকমিশন ও ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-এর অংশীদারিত্বে ক্লাইমেট পার্লামেন্ট বাংলাদেশ এবং দ্য আর্থ এই অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে। এতে মিডিয়া পার্টনার হিসেবে ছিল দৈনিক ইত্তেফাক।
অনুষ্ঠানে কি-নোট উপস্থাপন করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান সাবের হোসেন চৌধুরী, এমপি।
ক্লাইমেট পার্লামেন্ট বাংলাদেশের ভাইস চেয়ারপারসন ওয়াসেকা আয়েশা খান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর তালিকায় থাকা দেশের মধ্যে একটি হচ্ছে বাংলাদেশ। গত এক দশকের তুলনায় জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতির বিষয়ে এখন সচেতনতা অনেক বেড়েছে। সরকারের নীতি নির্ধারণেও তার প্রভাব পড়ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন তাতে আমরা দ্রুত সমাধান পাবো।
ক্লাইমেট পার্লামেন্ট বাংলাদেশের চীফ প্যাট্রন সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ২০২১ সাল নাগাদ হিমালয়ের হিমবাহগুলোর অন্তত এক তৃতীয়াংশ গলে যাওয়ার হুমকিতে রয়েছে। কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে যদি বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির হারকে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা যায়, তারপরও হিমালয় অঞ্চলের হিমবাহ গলা থামবেনা। উষ্ণতা বৃদ্ধির হার ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে গলে যাবে ৫০ শতাংশ হিমবাহ। জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কাজ করতে আমাদের যে স্ট্যান্ডিং কমিটি আছে তারা কাজ করে যাচ্ছে। গত ১০ বছর ধরে বর্তমান সরকার জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে যেমন কাজ করছে তা অব্যাহত থাকলে আমরা জলবায়ু সমস্যা থেকে বের হয়ে আসতে পারবো।
বাংলাদেশ সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেইঞ্জ এন্ড ডেভলপমেন্টের পরিচালক প্রফেসর সালেমুল হক বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন নিয়ে এখন গোটা বিশ্বই চিন্তিত। কারণ এক হিসেবে দেখা গেছে, গত ১৫০ বছরে উষ্ণায়নের কারণে সমুদ্রের পানির স্তর বেড়েছে মাত্রাতিরিক্ত। হিমবাহ ও বরফের চাদর গলে পানি হচ্ছে, আর সেই পানি গিয়ে মিশছে সমুদ্রে। সম্প্রতি এক তথ্যে প্রকাশ পেয়েছে আগামী দশকের মধ্যে সেই পানির জন্য সমুদ্রের পানির স্তর দ্বিগুণ বেড়ে যাবে। আমাদের সবাইকে নিয়েই এই সমস্যার সমাধান করতে হবে।
ব্রিটিশ হাইকমিশনের ডেভেলপমেন্ট ডিরেক্টর ম্যাট ক্যানেল বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় কপ ২৭ এবং গ্লাসগো জলবায়ু চুক্তিতে দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলি বাস্তবায়ন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ৷ যুক্তরাজ্য সরকার ১.৫ ডিগ্রি বাঁচিয়ে রাখার জন্য জলবায়ু প্রতিশ্রুতিতে বর্ধিত উচ্চাকাঙ্ক্ষার বিকাশে বাংলাদেশ সহ সকল দেশের সাথে কাজ করে যাচ্ছে। যুক্তরাজ্য এবং বাংলাদেশের মধ্যে নীতিগত সম্পৃক্ততা, দক্ষতা ভাগাভাগি এবং অর্থায়নের উপর ভিত্তি করে একটি শক্তিশালী অংশীদারিত্ব রয়েছে। একসাথে, আমরা জলবায়ু প্রতিশ্রুতিগুলোকে কাজে পরিণত করছি। এবং কপ ২৮ প্রস্তুতির গ্রহণের জন্য এখন থেকে সজাগ হওয়ার আমন্ত্রণ জানান ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা সিএসও-এর প্রচেষ্টার সাথে সরকারি উদ্যোগগুলিকে সারিবদ্ধ করার তাৎপর্যর উপর জোর দেন, কারণ কপ ২৭ -এর সময় নির্ধারিত উদ্দেশ্যগুলি এখনও সম্পূর্ণরূপে অর্জিত হয়নি। হতাশা সত্ত্বেও, তারা কপ কাঠামোর মধ্যে থাকার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন, যা একমাত্র উপলব্ধ পথ। এছাড়াও অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার প্রয়োজনীয়তাও তুলে ধরেন।
অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন, পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রানালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার এমপি , পরিবেশ, বন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য তানভীর শাকিল জয়। আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি, মির মুস্তাক আহমেদ রবি এমপি , মিঃ মাউরিজিও চিয়ান মিনিস্টার কাউন্সিলর ,বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি ইঞ্জি. মোহাম্মদ হোসেন, মহা-পরিচালক, বিদ্যুৎ বিভাগ, বিদ্যুৎ, শক্তি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, মিসেস মারিয়া স্ট্রিডসম্যান , হেড অফ কো-অপারেশন এবং ডেপুটি হেড অফ মিশন সুইডেন দূতাবাস, ঢাকা, আনোয়ারুল হক ,সহকারী রেসিডেনট প্রতিনিধি ,ডেমোক্রেটিক গভর্ন্যান্স ক্লাস্টার, ইউএনডিপি বাংলাদেশ, মিসেস মেরি মাসদুপুয়,বাংলাদেশে নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূত ড.ফরাসি দূতাবাস, ঢাকা, ফাইয়াজ মুর্শিদ কাজী মহাপরিচালক, বহুপাক্ষিক অর্থনৈতিক বিষয়ক শাখা, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মিসেস লুবনা ইয়াসমিন , যুগ্ম সচিব (জলবায়ু পরিবর্তন-১) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সহ বিভিন্ন ইয়ুথ এন্টারপ্রেনিউরস, সহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।