
সবজির ভরপুর মৌসুম শীতকাল। তাই সারাবছর সবজির দাম বাড়তি থাকলেও শীতকালে কিছু কমে। তবে গত কয়েক বছর ধরে বাজারের এই বৈশিষ্ট লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। অর্থাৎ শীতকালেও সারা বছরের মতো বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে অধিকাংশ সবজি। ভোক্তাদের অভিযোগ, বাজারে সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই। এই কারণে ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছে। আর বাংলাদেশে একবার কোন পণ্যের দাম বাড়লে, সেটা আর কমে না।’ অন্যদিকে খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘তারা বেশি দামে সবজি কিনে আনছেন। তাই লোকসান করে কম দামে বিক্রির কোন সুযোগ নেই।’ শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) রাজধানির বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
শুক্রবার কারওয়ান বাজারে দেখা যায়, বাজারে প্রায় সব ধরনের সবজি বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়, আলু বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়, বেগুন ৮০ টাকায়, টমেটো ৯০ থেকে ১০০ টাকায়, শসা বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায়। শীতকালে মুলা সাধারণত বিক্রি হয় ২০ টাকায়। শুক্রবার সেই মুলা বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়।
সবজি ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘আমরা কম দামে কিনতে পারলেই কেবল কম দামে বিক্রি করতে পারবো। আমরা পাইকারদের কাছে থেকেই বাড়তি দামে কিনে এনেছি। তাই বাড়তি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।’
মাংসের বাজারে দেখা গেছে, শুক্রবারের বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে ৬৮০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা। গরুর কলিজাও বিক্রি হচ্ছে একই দামে। খাসি মাংস বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা কেজি দরে, কলিজাও বিক্রি হচ্ছে খাসির মাংসের দামে। এছাড়া উপলক্ষে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৬০-১৭০ টাকা, লাল কক মুরগি বিক্রি হয়েছে ২৭০ টাকায়, পাকিস্তানি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৮০-২৯০ টাকায়। অর্থাৎ মুরগিও বিক্রি হচ্ছে বেশি দামে।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, অন্যান্য পণ্যের পাশাপাশি মাছও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। বড় চিংড়ি মাছ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৫৫০ টাকা, বোয়াল ৬০০ টাকা, শিং মাছ ৪০০ টাকা, রুই মাছ ২৮০ টাকা, কাতল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা।
গত সপ্তাহের ৭০ টাকা কেজি দরের কাঁচামরিচ শুক্রবার বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে। ডিমের দাম প্রতি হালি ৪০ টাকা থেকে ৩৮ টাকায় নেমেছে। এছাড়া বাকি প্রায় সব পণ্যের দামই বেড়েছে।
সরকারের বিপণন সংস্থা টিসিবির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে মোটা চালের দাম কেজিতে বেড়েছে তিন টাকার মতো। গত সপ্তাহে মোটা চাল ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে একই চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকা করে।
নতুন করে দাম বেড়েছে আটা ও ময়দার। প্যাকেট আটার দাম প্রতিকেজি ৬৮ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৭০ টাকা। আর প্যাকেট ময়দা বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে এই ময়দার দাম ছিল ৮০ টাকা কেজি।
এদিকে রমজান মাস ঘনিয়ে আসায় দাম বেড়েছে ছোলার। গত সপ্তাহে ৮৫ টাকা কেজি দরে ছোলা বিক্রি হয়েছে। এই সপ্তাহে সেই একই ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায় একইভাবে দেশি পেঁয়াজের দাম ৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৪৫ টাকা এবং একটু ভালো মানের পেঁয়াজ ৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সংবাদটি চেয়ার করুন