
পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বাড়িয়ে ১২ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণের যে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, তা প্রত্যাখ্যান করেছেন শ্রমিকরা। ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা করার দাবি পুনর্বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। একইসঙ্গে যৌক্তিক মজুরি বৃদ্ধি না করার প্রতিবাদে আগামী শুক্রবার সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) বিকেলে বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, গার্মেন্টস শ্রমিকদের মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা করার ঘোষণা প্রত্যাখান করছি। মজুরি বৃদ্ধির আমাদের যে দাবি সেটি সরকারকে পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানাচ্ছি। মজুরি বৃদ্ধির দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ১১ সংগঠন নিয়ে গঠিত হয়েছে গার্মেন্টস শ্রমিক আন্দোলন প্ল্যাটফর্ম। এ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে আগামী শুক্রবার প্রতিবাদ সমাবেশ করব।
পোশাক শ্রমিকদের মজুরি বাড়িয়ে ১২ হাজার ৫০০ টাকা করার সিদ্ধান্তের পরপরই মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) বিকেলে আপত্তি জানায় তারা। এরপরই নিম্নতম মজুরী বোর্ড চেয়ারম্যান কার্যালয়ের সামনে ‘গার্মেন্টস শ্রমিক আন্দোলন’-এর ব্যানারে মজুরি প্রত্যাখ্যান ও পুনঃবিবেচনার দাবিতে প্রতিবাদ মিছিল করে গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের নেতাকর্মীরা। মিছিলটি তোপখানা রোড হয়ে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সামনে এসে শেষ হয়।
এর প্রতিবাদে আগামী শুক্রবার (১০ নভেম্বর) বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতি।
সংগঠনটির নেতারা বলেন, গার্মেন্টস মালিকদের প্রেসক্রিপশনেই সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এতে শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষা হয়নি। ন্যূনতম মজুরি ২৩ হাজার টাকা করার দাবিতে আন্দোলন চলমান থাকবে।
এ বিষয়ে সরকারপক্ষের শ্রমিক সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী পোশাক শ্রমিকদের জন্য এই মজুবি বৃদ্ধিতে সমর্থন দিয়েছেন। তারপরও আমরা চেষ্টা করব এটাকে আরও বৃদ্ধি করার।
এর আগে, পোশাক শ্রমিক ও মালিকপক্ষের ছয় দফা বৈঠক শেষে আজ (মঙ্গলবার) দুপুরে সচিবালয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ন্যূনতম মজুরি ১২ হাজার ৫০০ টাকা করার ঘোষণা দেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা এটা ঘোষণা করছি। ন্যূনতম মজুরি ৫৬.২৫ শতাংশ বাড়বে। সঙ্গে বছরে পাঁচ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট থাকবে। ফলে পোশাক কারখানায় নিয়োজিত শ্রমিকদের ন্যূনতম সাড়ে ১২ হাজার টাকা বেতন দিতে হবে।
জানা গেছে, গত ১ নভেম্বর মজুরি বোর্ডের পঞ্চম সভায় শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি ২০ হাজার ৩৯৪ টাকার প্রস্তাব করেন শ্রমিকদের প্রতিনিধি সিরাজুল ইসলাম রনি। অন্যদিকে, ন্যূনতম মজুরি ১২ হাজার ৫০০ টাকার করার প্রস্তাব করেন পোশাক কারখানা মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান। তার প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতেই নতুন মজুরির ঘোষণা দিল সরকার।