জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে আন্দোলন, ভিসানীতি, নিষেধাজ্ঞা বা বিদেশিদের ভয় দেখিয়ে কোনো লাভ নেই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নৌকা মার্কা স্মার্ট বাংলাদেশ উপহার দেবে জানিয়ে তিনি বলেন, নৌকা মার্কা স্বাধীনতা দিয়েছে; নৌকা মার্কা অর্থনৈতিক উন্নতি দিয়েছে; নৌকা মার্কা ডিজিটাল বাংলাদেশ দিয়েছে। নৌকা সারাজীবন উজান ঠেলেই এগিয়ে গেছে, এগিয়ে যাবে। ঝড় ঝঞ্ঝা পাড়ি দিয়েই নৌকা তীরে থেকে জনগণের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।
শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে আগারগাঁও পুরাতন বাণিজ্য মেলা মাঠে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে আয়োজিত সুধী সমাবেশে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের জনগণ প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন হবে, আমরা স্মার্ট জনশক্তি তৈরি করব। আমাদের সরকার স্মার্ট সরকার হবে; আমাদের অর্থনীতি স্মার্ট অর্থনীতি হবে; আমাদের সমাজ স্মার্ট সমাজ হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলব। আমরা সেভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
বাংলাদেশের এত উন্নয়ন হওয়ার কারণ জানিয়ে তিনি বলেন, ২০০৯ সাল থেকে গণতন্ত্র আর মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করে আমরা জনগণের ভোটে ক্ষমতায় এসেছি। আমরা গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে পেরেছি, তার কারণে আজ বাংলাদেশের এত উন্নয়ন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকে নাকি গণতন্ত্র চোখে দেখে না। আবার বলেন, গণতন্ত্র উদ্ধার করবেন! যাদের জন্ম হয়েছে অগণতান্ত্রিকভাবে; সংবিধান লঙ্ঘন করে; উচ্চ আদালত যাদের ক্ষমতা দখল অবৈধ ঘোষণা করেছে। তাদের হাতে জনগণ কি গণতন্ত্র দেবে? তারপরও তারা আন্দোলনের নামে অনেক সময় অনেক কথা বলে।
শেখ হাসিনা বলেন, আন্দোলন-সংগ্রাম দেখে অনেকে ঘাবড়ে যান। তারপর আবার স্যাংশন, ভিসানীতি… এগুলো আসে। আমার স্পষ্ট কথা– এই মাটি আমাদের। জাতির পিতার নেতৃত্বে আমরা দেশ স্বাধীন করেছি। এসব ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। বাংলাদেশের মানুষ অধিকার আদায় করতে জানে। বাংলাদেশ তো ছয় ঋতুর দেশ। এই ছয় ঋতুর দেশে কখনো বর্ষা, কখনো ঝড়, কখনো জলোচ্ছ্বাস দেখার অভিজ্ঞতা আমাদের আছে।
তিনি বলেন, আজ যারা আন্দোলনের নামে রোজই আমাদের ক্ষমতা থেকে ফেলে দিচ্ছেন, আমি আপনাদের বলতে চাই, আমি কবির ভাষায় বলব– মেঘ দেখে কেউ করিস নে ভয়, আড়ালে তার সূর্য হাসে। ভয়কে জয় করে বাংলাদেশের জনগণ তার উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাবে।
সরকারি চাকরিজীবীরা পেনশন পায়, সাধারণ মানুষ পায় না স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাধারণ মানুষের যখন একটু বয়স হয়ে যাবে, কর্মহীন হয়ে যাবে, তখন তারা যাতে পেনশন পায়, সে কারণে সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করেছি। ভবিষ্যৎ আর অন্ধকারে থাকবে না, শুধু বর্তমান উন্নয়ন না, ভবিষ্যৎ যাতে উজ্জ্বল হয় তার জন্য আমরা পেনশন স্কিম চালু করেছি। এটা আমাদের নির্বাচনী ওয়াদা ছিল। সেই ওয়াদা আমরা রক্ষা করতে পেরেছি।
বেকারদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, কর্মসংস্থান ব্যাংক আছে, বিনা জামানতে ঋণ পাওয়া যায়। ঋণ নিয়ে সবাইকে কাজ করতে হবে। কেউ বেকার বসে থাকলে হবে না। ফসল ফলাতে হবে; কাজ করতে হবে; নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে।
সরকারপ্রধান বলেন, ১৯৭৫ সাল থেকে ৯৬, ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত যে অন্ধকার যুগে বাংলাদেশ ছিল, আজ সে অন্ধকার যুগে নেই। বাংলাদেশ এখন আলোর পথে যাত্রা শুরু করেছে। শতভাগ বিদ্যুৎ দিয়েছি, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছি। এখন বেকার সমস্যা তিনভাগে নেমে এসেছে। তারপর আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি। যার ফলে কর্মসংস্থানের আরও সুযোগ হয়েছে। আমার কাজ একটাই, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা। যে অন্ধকার যুগ ছিল, সেই অন্ধকার যুগ থেকে বাংলাদেশের মানুষকে আলোর পথে নেওয়া। আমরা যে ওয়াদা দিয়েছি একে একে সব ওয়াদা পূরণ করেছি।