সাভার উপজেলার কাউন্দিয়া ইউনিয়নের বেলতলীতে একটি ভবনে রংয়ের কাজ করার সময় পড়ে গিয়ে শফিকুল ইসলাম (৫৪) নামে এক নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। গত মঙ্গলবার সকাল ৯ টার দিকে জর্ডান প্রবাসী আনোয়ারা আনুর ভবনে রংয়ের কাজ করার সময় ঘটনাটি ঘটে। নিহত শফিকুল সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার মৃত এলাইস মিয়ার ছেলে। তিনি নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতেন।
ঘটনাটি স্থানীয়রা কাউন্দিয়া পুলিশ ফাঁড়িকে জানালে ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই সুব্রত ঘটনাস্থলে যান। সুরতহাল প্রতিবেদনের জন্য মৃতের লাশ হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পাঠান। কিন্তু মৃতের লাশ নিয়ে অর্থ-বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে এসআইএর বিরুদ্ধে। ভবন থেকে পড়ে মৃত্যুর ঘটনায় ভবনের মালিক আনোয়ারা দেশের বাহিরে থাকায় তার ভাই মোহাম্মদ আলী (৪০) কে মামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে ও আটকে রেখে ২০ (বিশ) লক্ষ টাকা দাবী করে স্থানীয় ইউপি সদস্য বাবুল। শ্রমিকের কাজের কোনো সেফটি সিকিউরিটি না থাকা ও নিয়ম-নীতি না মেনে ঝুকিপূর্ণভাবে ভবনে কাজ করার কারণে এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে অভিযোগ উঠিয়ে ভবনের মালিক ও রংয়ের কাজের ঠিকাদারকে জিম্মি করে ২০ লক্ষ টাকা দাবী করা হয় বলে জানান ভবন মালিকের ভাই মোহাম্মদ আলী। মৃত ব্যক্তির পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলে তার কাছে এ অর্থ চাওয়া হয়।
এদিকে শফিকুলের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় বাকরুদ্ধ তার পরিবার। অমানবিকভাবে শফিকুলের মৃতদেহ ৬ ঘণ্টা ফেলে রেখে দরকষাকষির মাধ্যমে মোহাম্মদ আলীর কাছ থেকে ১ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা নিয়ে বিকাল ৩ টার দিকে লাশ পোস্টমর্টেমে পাঠান এসআই সুব্রত। ৪০ হাজার টাকা মৃতের স্ত্রীকে দিয়ে ১ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছে পুলিশ ও স্থানীয় ইউপি সদস্য বাবুল এমন অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগীসহ এলাকাবাসী। মৃতের পরিবারকে মাত্র ৪০ হাজার টাকা দিয়ে বাকি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
ভুক্তভোগী মোহাম্মদ আলী বলেন ঘটনার পরপর আমাকে আটকে রেখে ও ভয় দেখিয়ে আমার বোনের কাছ থেকে এ অর্থ আদায় করা হয়। এলাকাবাসীর পক্ষে ও প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বেলতলী শাহী জামে মসজিদের ইমাম সাইফুল ইসলাম বলেন, এমন হৃদয় বিদারক ঘটনায় পুলিশের এরকম আচরণ, বিল্ডিং মালিকের গাফিলতি ও অসহায় পরিবারকে সহায়তা করার নামে অর্থ আত্মসাতের ঘটনা সত্যিই দূঃখজনক।
লাশ নিয়ে অর্থ বাণিজ্যের ব্যাপারে ফাঁড়ির ইনচার্জ সুব্রত দাসকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ৪০ হাজার টাকা মৃত ব্যক্তির পরিবারকে দেওয়া হয়েছে। সুরতহাল প্রতিবেদনের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে ও থানায় একটি ইউডি মামলা রজু হয়েছে।
এ ব্যাপারে সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, অভিযোগের ব্যাপারে শুনেছি। অর্থ লেনদেনের ব্যাপারে তার কোনো সম্পৃক্ততা থাকলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।