দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য আলাদা করে কোনো সরকার গঠন করা হবে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তফসিল ঘোষণার পর এই সরকারই নিয়মমাফিক তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন সরকারপ্রধান।
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই কথা বলেন।
গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে যোগদান উপলক্ষে সম্প্রতি বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে তিন দিনের সরকারি সফর বিষয়ে জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আরপিও অনুযায়ী যখনই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হবে এবং নমিনেশন সাবমিট করা হবে, তখন থেকেই মন্ত্রীরা আর কোনো সরকারি সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করতে পারবেন না। তখন একজন প্রার্থী হিসেবে তাদের ভোট চাইতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচনী প্রচারণার সময় কোনো মন্ত্রী তাদের ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারবেন না। কোনোরকম সরকারি সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করতে পারবেন না। এটাই নিয়ম। কিন্তু সরকার থেমে থাকবে না। সরকারি দৈনন্দিন যে কাজগুলো সেগুলো কিন্তু করতে হবে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, সরকার ছোট করলে অনেক মন্ত্রণালয়ের কাজ আর হয় না। সেগুলো বাধাগ্রস্ত হয়। সেগুলো যাতে বাধাগ্রস্ত না হয়, উন্নয়নের ধারা যাতে অব্যাহত থাকে আমাদের সেটাই প্রচেষ্টা।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী জানান, তিনি নির্বাচনে একজন প্রার্থী হিসেবে তখন আর গণভবনকে সভার জন্য ব্যবহার করবেন না। ধানমন্ডিতে একটি অফিস নেবেন, যা আগেরবারও নিয়েছিলেন।
এ সময় শেখ হাসিনা আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে কোনো সংশয় নেই বলে জানান। তিনি বলেন, একটা কথাই বলতে পারি, নির্বাচন হবে এবং সময়মতই হবে।
নির্বাচন নিয়ে বিদেশির চাপের দিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কে চোখ রাঙালো, আর কে ব্যাকালো, আমরা ওটার পরোয়া করি না। অনেক সংগ্রাম করেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছি।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত শর্তহীনভাবে সংলাপের আশা প্রকাশ করেছেন। আপনি এটাকে কীভাবে দেখছেন? সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, কার সঙ্গে সংলাপ? বিরোধী দলটা কে? বিরোধী দল হচ্ছে, যাদের সংসদে আসন আছে। এর বাইরেরগুলো আমেরিকায়ও বিরোধী দল হিসেবে দেখে না। ট্রাম্পকে তারা কী বলবে? তারা তো তাদের বিরোধী দল। যদিও আমরা তাদের পদ্ধতিতে না।
২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে সহিংসতার ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই যে মানুষগুলো হত্যা করা হলো, তখন তাকে (পিটার হাস) প্রশ্ন করা হলো না কেন? যখন একটা উপনির্বাচনে হিরো আলমকে কেউ মেরেছে, তখন তারা বিচার দাবি করেছে। এখন যখন পুলিশ হত্যা করল, সাংবাদিকদের ওপর হামলা করল তখন বিচার দাবি করল না কেন?
বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, যেভাবে পিটিয়ে পুলিশ হত্যা করেছে, এরপর খুনিদের সঙ্গে কিসের বৈঠক? কিসের আলোচনা? যারা এভাবে মানুষকে হত্যা করতে পারে, যারা উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ধ্বংস করতে পারে, তাদের সঙ্গে ডায়ালগ? সে বসে ডিনার খাক, সে বসে ডায়ালগ করুক। এটা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। খুনিদের সঙ্গে ডায়ালগ তার দেশের মানুষও চাইবে না। বিএনপি–জামায়াতকে মানুষ ঘৃণা করে। তাদের দুর্নীতির জন্য কানাডা থেকে লোক এসে সাক্ষ্য দিচ্ছে।