টাঙ্গাইলে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করায় বিপাকে পড়েছেন স্থানীয়রা। এছাড়া তিনটি নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে পানি বৃদ্ধির কারণে জেলার ভূঞাপুর, নাগরপুর ও কালিহাতীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের কষ্টাপাড়া, ভালকুটিয়া ও নিকরাইল ইউনিয়নের পাটিতাপাড়া, কোনাবাড়ি ও চিতুলিয়াপাড়া এলাকায়। সম্প্রতি ভাঙনরোধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্থানীয়রা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কাকুয়া ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম ইতোমধ্যে পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়া ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের কষ্টাপাড়া, খানুরবাড়ি এলাকাতেও পানি প্রবেশ করেছে। ফলে এলাকার মানুষজন পানিবন্দি হওয়ায় বিপাকে পড়েছে। তবে পানি আরও বৃদ্ধি পেলে সেইসব এলাকাগুলোতে যাতায়াত ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ঝিনাই নদীর পানি জোকারচর পয়েন্টে আট সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৫৯ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি পোড়াবাড়ি পয়েন্টে ১৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার এবং ধলেশ্বরী নদীর পানি এলাসিন পয়েন্টে ১০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ছয় সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ভূঞাপুর উপজেলা কষ্টাপাড়া ঘোষপাড়া গ্রামের বন্ধনা রানী ঘোষ বলেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি ঘরের সামনে যমুনা নদীর পানি। হঠাৎ পানি আসাতে বিপাকে পড়েছি। যেভাবে পানি বাড়ছে তাতে বিকেলের পর আরও বিপাকে পড়তে হবে। লোকালয়ে পানি আসায় গীতাস্কুল ও কেন্দ্রীয় নাটমন্দিরে ধর্মীয় শিক্ষার ক্লাস কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।
কষ্টাপাড়ার গীতাস্কুল পরিচালনা কমিটির সদস্য শিশির দাস বলেন, যমুনার নদীর পানি উপচে গ্রামে প্রবেশ করেছে। এতে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডে নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, আগামী ৬ আগস্ট পর্যন্ত টাঙ্গাইলের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাবে। তারপর থেকে পানি কমতে শুরু করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভূঞাপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বেলাল হোসেন বলেন, সরেজমিনে যমুনা নদীতে গিয়ে পানি বৃদ্ধি ও ভাঙনের চিত্র দেখেছি। ভাঙনরোধে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। ইতোমধ্যে একটি এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে। উপজেলা প্রশাসন থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।