কুড়িগ্রামে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত

কুড়িগ্রামে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধির কারণে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙনও। প্লাবিত হয়ে পড়েছে বহু নিম্নাঞ্চল। ডুবে গেছে সবজি ও আমন ধানের ক্ষেত। এছাড়া আশপাশের অন্যান্য নদ-নদীর পানিও বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী শনিবার বিকেল ৩টায় তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টায় ৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এছাড়া ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৭ সেন্টিমিটার, চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার, ধরলার পানি কুড়িগ্রাম সদর সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯০ সেন্টিমিটার, তালুকশিমুলবাড়ী পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৩৭ সেন্টিমিটার, দুধ কুমারের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জানা গেছে, শুক্রবার থেকে তিস্তা নদীতে হু হু করে বাড়তে থাকে পানি। সেই সঙ্গে শুরু হয় ভাঙন। এতে রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের খিতাবখাঁ ও গতিয়াশাম এবং বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের চতুরা, রামহরি এবং কালিরহাট গ্রামে তীব্র ভাঙন দেখা দেয়। রাত থেকে দুপুর পর্যন্ত শুধু খিতাবখাঁ মৌজায় ১৪টি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এর আগে ৫টি মৌজায় অর্ধশতাধিক ব্যক্তির বসতভিটা নদীগর্ভে হারিয়ে গেছে। তিস্তার মাঝের চরসহ আশপাশের গ্রামগুলোতে শত শত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

এদিকে খিতাবখাঁ গ্রাম ও চর খিতাবখাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং গতিয়াশাম কমিউনিটি ক্লিনিকটিকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছেন স্থানীয়রা। এছাড়া কালিরহাট বাজার, বুড়িরহাট বাজার, কালিরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং দুটি ইউনিয়নের চারটি মসজিদ, দুটি মন্দির, বিভিন্ন স্থাপনা ও শত শত বিঘা ফসলি জমি হুমকির মুখে পড়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অব্যাহত ভারী বর্ষণে শুধু রাজারহাট উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের শত শত বিঘা জমির ধানসহ বিভিন্ন জাতের ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। ছোট-বড় শতাধিক পুকুর ও জলাশয় পানিতে ভেসে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

রাজারহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, উপজেলায় আনুমানিক ১৩৫ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।

খিতাবখাঁ গ্রামের বলেন, ‘মোর চোখের সামনোত বাড়িটা তিস্তা নদীত চলি গেইছে, শত চেষ্টা করিয়াও হামরা আটকাবার পাই নাই। এ্যালা কোটে থাকমো, কি খামো আল্লাাহ ছাড়া কাইয়ো জানে না।’

একই গ্রামের নুর মোহাম্মদ বলেন, ‘তিস্তা নদী মোর সউগ শ্যাষ করছে। এ্যালা বাড়িঘর করার মতন টাকা-পাইসা, জায়গা-জমিন কিছু নাই।’

রাজারহাট উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আরিফুল আলম জানান, আনুমানিক ৩০ হেক্টর পুকুর-জলাশয় পানিতে ভেসে যাওয়ায় অনেক কৃষকের ক্ষতি হয়েছে। 

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ-আল-মামুন জানান, তিস্তা নদীর পানি হঠাৎ অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে। ভাঙন-প্রবণ এলাকাগুলোতে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। 

Spread the love

Leave a Reply

Specify Facebook App ID and Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Facebook Login to work

Specify Twitter Consumer Key and Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Twitter Login to work

Specify LinkedIn Client ID and Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for LinkedIn Login to work

Specify Youtube API Key in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Youtube Login to work

Specify Google Client ID and Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Google and Youtube Login to work

Specify Instagram App ID and Instagram App Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Instagram Login to work

Your email address will not be published. Required fields are marked *