রাজধানীর গুলশান-১ নম্বরে গ্লোরিয়া জিন্স ক্যাফের পাশে গুলির ঘটনায় মূল অভিযুক্ত আব্দুল ওয়াহিদ ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ সভাপতি। তিনি একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মালিক।
ঘটনার বিষয়ে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিকাশ করে টাকা না দেওয়ায় ওমানপ্রবাসী আরিফ হোসনকে গ্লোরিয়া জিন্স ক্যাফের পাশের একটি বিকাশ দোকানের মালিক হাবিবুর রহমান আলিফ আটক করে রাখে। ফোন পেয়ে মিন্টু ও মনির আহমেদসহ কয়েকজন ঘটনাস্থলে এসে আরিফকে ছাড়িয়ে নিতে চেষ্টা করে। কিন্তু দোকানদাররা বাধা দিলে আব্দুল ওয়াহিদ মিন্টু সঙ্গে সঙ্গে অস্ত্র বের করে সাত-আট রাউন্ড গুলি ছোড়ে।
পুলিশ জানায়, মিন্টুর ছোড়া গুলিতে আমিনুল ইসলাম নামে একজন গাড়িচালক ও রহিম নামে একজন ভ্যানচালক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
এ বিষয়ে রোববার (১৫ জানুয়ারি) রাতে গুলশান থানায় উপস্থিত হয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) আব্দুল আহাদ বলেন, আজ বিকেল আনুমানিক ৪টার দিকে গ্লোরিয়া জিন্স ক্যাফের পাশে আলফা স্টোর নামে একটি ফ্লেক্সিলোডের দোকানে আরিফ হোসেন নামে এক ব্যক্তি ৭৫ হাজার টাকা বিকাশ করে। বিকাশ করার সময় সে প্রথমে দোকানদারকে বলে আপনি ৭৫ হাজার টাকা বিকাশ করেন আমি টাকা দিচ্ছি। দোকানদার বিকাশ করার পর সে টাকা দিতে পারছে না। যেহেতু সে টাকা দিতে পারছে না, তখন দোকানদার তাকে আটক করে বলে তুমি টাকা না দিয়ে যেতে পারবে না। এক পর্যায়ে আটক অবস্থায় আরিফ তার ভগ্নিপতি মনির আহমেদকে ফোন করে। ফোন পেয়ে মনির হোসেন তার আরও ৪-৫ জন বন্ধুকে নিয়ে ফ্লেক্সিলোডের দোকানে আসে আরিফকে নিয়ে যাওয়ার জন্য।
‘তখন টাকা না দিয়ে আরফিকে নিয়ে যাবে এই বিষয়টি আশপাশের দোকানদাররা প্রতিহত করতে আসে। এ সময় সব দোকানদার বলে টাকা না দিয়ে আরিফকে নেওয়া যাবে না। একপর্যায়ে মনিরের সঙ্গে আসা আব্দুল ওয়াহিদ মিন্টুর সঙ্গে থাকা লাইসেন্স করা অস্ত্র দিয়ে সে এলোপাতাড়ি সাত-আট রাউন্ড গুলি ছুড়ে।’
তিনি আরও বলেন, সে যখন এলোপাতাড়ি গুলি চালাচ্ছিল তখন পাশে থাকা গাড়িচালক আমিনুল ইসলাম যার মালিক গ্লোরিয়া জিন্স ক্যাফেতে এসেছিলেন, সেই চালকের পায়ে গুলি লাগে। আমরা তাকে উদ্ধার করে দ্রুত ইউনাইটেড হাসপাতালে পাঠাই। আব্দুর রহিম নামে আরও একজন ভ্যানচালকের পায়ে গুলি লাগে। এ সময় পাশে টহল দিতে থাকা পুলিশ সদস্যরা আব্দুল ওয়াহিদ মিন্টুকে অস্ত্রসহ আটক করে।
ডিসি গুলশান বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা এ ঘটনায় তিন জনকে আটক করেছি। আটকরা হলেন- আরিফ হোসেন, মনির আহমেদ ও আব্দুল ওয়াহিদ মিন্টু। তাদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে মামলা প্রক্রিয়াধীন।
আব্দুল ওয়াহিদ মিন্টুর রাজনৈতিক পরিচয় জানা গেছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সে এমএস প্রোগ্রেসিভ এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মালিক। সে যাত্রাবাড়ীতে থাকে। তার রাজনৈতিক পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এআড়া ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, ১৬ রাউন্ড গুলি, ৩টি গুলির খোসা, ৪টি ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়েছে। পিস্তলটি লাইসেন্স করা এবং ২০২৪ সাল পর্যন্ত মেয়াদ রয়েছে বলে জানা গেছে।