এনআইডি নিবন্ধন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিতে সংসদে বিল সংসদে বিল উত্থাপন

জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিবন্ধন নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিতে সংসদে বিল তোলা হয়েছে।

সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন বিল নামের বিলটি সংসদে উত্থাপন করেন। ২০১০ সালের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন রদ করে নতুন এই আইন করা হচ্ছে। এই আইনের মাধ্যমে জন্মের পর থেকে নাগরিক জাতীয় পরিচয়পত্র পাবেন।

বিদ্যমান ব্যবস্থায় এনআইডি দিয়ে থাকে নির্বাচন কমিশন। নতুন আইনটি কার্যকর হলে ইসি সে ক্ষমতা হারাবে। এটি সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের অধীনে একটি নিবন্ধকের আওতায় যাবে। অবশ্য আইনটি সরকারের গেজেট প্রজ্ঞাপন দিয়ে কার্যকর হবে বলে বিলে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিলে বলা হয়, বিদ্যমান আইনটি রহিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের নিকট রক্ষিত এবং নির্বাচন কমিশন কর্তৃক সংগৃহীত জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত সকল তথ্য–উপাত্ত নিবন্ধকের কাছে হস্তান্তরিত হবে।

বিলটি পাস হলে নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা খর্ব হবে এবং ভোটার তালিকা প্রণয়নে জটিলতা হবে এমন অভিযোগ করে এর বিরোধিতা করেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম।

জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ভোটার লিস্টের ক্ষেত্রে এই জাতীয় পরিচয়পত্র আইন কোন অন্তরায় ঘটবে না। সেখানে নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধিরাও থাকবেন। আমরা ওইভাবেই প্রসেস করবে। যখন নাগরিকের বয়স ১৮ বছর হয়ে যাবে তখনি ভোটার হয়ে গেছেন বলে নোটিশ পেয়ে যাবেন। তার নাম ভোটার লিস্টে অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। এর সবগুলো বিষয় চিন্তাভাবনা করে সময়োপযোগী করে বিদেশের সঙ্গে তাল মিলিয়েই এটা করেছি। জাতীয় পরিচয়পত্র কার্ডটি সবখানে প্রয়োজন হয়। সেজন্যই আমরা এ কাজটি করতে যাচ্ছি।

মন্ত্রী বলেন, সারা পৃথিবীতেই ব্যক্তিগত পরিচয়ের জন্য একটি কার্ড থাকে। এটি সারা পৃথিবীতে প্রচলিত। আমরা সেই জাতীয় পরিচয়পত্রটি করতে চাচ্ছি।

বিদ্যমান জাতীয় পরিচয়পত্রের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আমরা ভোটের সময় একটি ভোটার লিস্ট করেছিলাম। আমাদের প্রয়োজনেই ওই ভোটার লিস্ট থেকে জাতীয় পরিচয়পত্রের মতো একটি কার্ড দিয়েছিলাম। ১৮ বছরের পর থেকে তা কার্যকর হচ্ছিল। আমাদের উদ্দেশ্য- শিশুর জন্মের দিন থেকেই একটি পরিচয় পত্রের নম্বর হয়ে যাবে, যেদিন সে মৃত্যুবরণ করবে তার নম্বরটির সমাপ্তি ঘটবে।

বিলে বলা হয়েছে, জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার জন্য একজন নিবন্ধক থাকবেন। তিনি সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হবেন। জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়ার জন্য প্রত্যেক নাগরিককে পরিচয় নিবন্ধন করতে হবে। এজন্য নির্ধারিত পদ্ধতিতে নিবন্ধকের কাছে আবেদন করতে হবে। একজন নাগরিককে নিবন্ধক একটি নাম্বার দেবেন। সেটা একক পরিচিতি নাম্বার (ইউনিক আইডেনটিফিকেশন নাম্বার) হিসেবে সবখানে ব্যবহার হবে।

বিলে আরও বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনের চাহিদা মোতাবেক নিবন্ধক প্রয়োজনীয় তথ্য উপাত্ত প্রদান করবে। এজন্য নিবন্ধকের কার্যালয়ের অধীন একটি সেল থাকবে। এই সেলে নির্বাচন কমিশনের এক বা একাধিক কর্মচারী দায়িত্ব পালন করবে। এর ফলে নিবন্ধকের দপ্তর থেকে সরবরাহকৃত তথ্যের ভিত্তিটি ইসি ভোটার তালিকা তৈরি করবে।

বিলে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, নিবন্ধন কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা, সমন্বয় ও পরিবীক্ষণের জন্য একটি সমন্বয় কমিটি থাকবে। এই কমিটির সভাপতি হবেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব। নিবন্ধক হবেন এই কমিটির সদস্য সচিব। নির্বাচন কমিশন ও সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধিরা থাকবেন সদস্য।

Spread the love

Leave a Reply

Specify Facebook App ID and Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Facebook Login to work

Specify Twitter Consumer Key and Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Twitter Login to work

Specify LinkedIn Client ID and Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for LinkedIn Login to work

Specify Youtube API Key in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Youtube Login to work

Specify Google Client ID and Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Google and Youtube Login to work

Specify Instagram App ID and Instagram App Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Instagram Login to work

Your email address will not be published. Required fields are marked *