ঊর্ধ্বমুখী বাজারে করপোরেট সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ডিমের দাম বাড়ানো হয়েছে

মাছ-মাংসের ঊর্ধ্বমুখী বাজারে করপোরেট সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এক পিস ডিমের দাম বাড়ানো হয়েছে পাঁচ টাকা। কৃত্রিম সংকট তৈরি করে ভোক্তাদের কাছ থেকে ১০ টাকার ডিম ১৫ টাকা বিক্রি করে কেবল আগস্ট মাসের ৭ দিনে ১২৫ থেকে ১৪০ কোটি টাকা অতিরিক্ত মুনাফা তুলে নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এর মধ্যে করপোরেট ব্যবসায়ীরাই মুনাফা করেছেন ৬০ থেকে ৭০ কোটি টাকা।

করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে- কাজী ফার্মস, প্যারাগন পোল্ট্রি, নারিশ ফিড, আফতাব বহুমুখী ফার্মস, বাংলাদেশ হ্যাচারি লিমিটেড, ফেরদৌসী পোলট্রি কমপ্লেক্স, মোল্লা পোলট্রি ফার্মস, আপন অ্যাগ্রো কমপ্লেক্স, নবীণ অ্যাগ্রো ফার্মস, খন্দকার পোলট্রি কমপ্লেক্স, ইউনাইটেড এগ্রো কমপ্লেক্স কোম্পানি ইত্যাদি।

সংগঠন দুটির ফেসবুক পেজে মো. শিমুল হক রানা নামের এক কর্মকর্তা প্রতিদিন করপোরেট মালিকদের সংগঠন- বিপিআইএ’র দাম আপলোড করেন। তার সেই দামের তালিকা মুহূর্তের মধ্যে দেশের সব পোলট্রি মালিকদের নজরে আসে। পরে তারা বিভিন্ন গ্রুপে ডিমের বর্ধিত দাম ছড়িয়ে দেন। সেই তালিকা অনুযায়ী তারা কেনা-বেচা করেন। ফেসবুক পেজের পাশাপাশি ডিমের নির্ধারিত দাম ‘অ্যাগ্রিকেয়ার টোয়েন্টিফোর.কম’ নামক ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়।
প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন (বিপিআইএ) ও বাংলাদেশ পোলট্রি খামার রক্ষা জাতীয় পরিষদ (বিপিকেআরজেপি)। ডিমের দাম বাড়ানো হয় এ দুই সংগঠনের ফেসবুক পেজ ও একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে।

সংগঠন দুটির ফেসবুক পেজে মো. শিমুল হক রানা নামের এক কর্মকর্তা প্রতিদিন করপোরেট মালিকদের সংগঠন- বিপিআইএ’র দাম আপলোড করেন। তার সেই দামের তালিকা মুহূর্তের মধ্যে দেশের সব পোলট্রি মালিকদের নজরে আসে। পরে তারা বিভিন্ন গ্রুপে ডিমের বর্ধিত দাম ছড়িয়ে দেন। সেই তালিকা অনুযায়ী তারা কেনা-বেচা করেন। ফেসবুক পেজের পাশাপাশি ডিমের নির্ধারিত দাম ‘অ্যাগ্রিকেয়ার টোয়েন্টিফোর.কম’ নামক ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়।


ভোক্তা ও বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত দুই মাসে মুরগির খাদ্যের দাম কিংবা পরিবহন খরচ বাড়েনি। তারপরও কৃত্রিম সংকট তৈরি করে ডিমের দাম বাড়িয়েছে করপোরেট চক্রটি। ঠিক এক বছর আগেও একইভাবে কারসাজির মাধ্যমে দাম বাড়ানো হয়। ডিমের দাম বাড়ানোর কারণে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন কাজী ফার্মসসহ বেশি কয়েকটি করপোরেট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলাও করেছে।

আমরা চাহিদা অনুসারে প্রতিদিনের বাজার-মূল্য প্রকাশ করি। এটিকে মূল্য নির্ধারণ বলা যাবে না। আমরা তো কাউকে এ দামে কেনা-বেচার জন্য বলি না। তেল, চিনির মতো খামারিদের কথা চিন্তা করে সরকার ডিমের মূল্য নির্ধারণ করে দিলে কোনো সমস্যা হতো না। খামারিরা ডিমের ন্যায্য মূল্য পেত। বাজার স্থিতিশীল থাকত
বিপিআইএ মহাসচিব ও ইউনাইটেড অ্যাগ্রো কমপ্লেক্সের স্বত্বাধিকারী খন্দকার মুহাম্মদ মহসিন
এবার দাম বাড়ার পর জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কারওয়ান বাজার, কাপ্তান বাজারসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেছে। সেখানে দাম বাড়ার প্রমাণসহ ডিম কেনা-বেচার রসিদ না পাওয়ায় খুচরা ব্যবসায়ী ও আড়তদারদের জরিমানা করেছে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও পোলট্রি কোম্পানির তথ্য মতে, দেশে প্রতিদিন সাড়ে তিন থেকে চার কোটি পিস ডিম খান মানুষ। জুলাই মাসে খুচরা বাজারে ডিম বিক্রি হয়েছে ১০ টাকা পিস। সেখান থেকে পাঁচ টাকা বেড়ে আগস্ট মাসে এক পিস ডিমের দাম দাঁড়িয়েছে ১৫ টাকা। দিনে চার কোটি ডিম বিক্রি হলে পাঁচ টাকা করে ১৫ থেকে ২০ কোটি টাকা মুনাফা করেছেন ব্যবসায়ীরা।

এর মধ্যে করপোরেট ও কিছু খামারির মুনাফা হয়েছে আড়াই টাকা করে দিনে ৯ থেকে ১০ কোটি টাকা। সাত দিনে তাদের মুনাফা হয়েছে ৬০ থেকে ৭০ কোটি টাকা। বাকি ৬০ থেকে ৭০ কোটি টাকা মুনাফা করছে ডিলার বা আড়ৎদার, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও পোলট্রি কোম্পানির তথ্য মতে, দেশে প্রতিদিন সাড়ে তিন থেকে চার কোটি পিস ডিম খান মানুষ। জুলাই মাসে খুচরা বাজারে ডিম বিক্রি হয়েছে ১০ টাকা পিস। সেখান থেকে পাঁচ টাকা বেড়ে আগস্ট মাসে এক পিস ডিমের দাম দাঁড়িয়েছে ১৫ টাকা। দিনে চার কোটি ডিম বিক্রি হলে পাঁচ টাকা করে ১৫ থেকে ২০ কোটি টাকা মুনাফা করেছেন ব্যবসায়ীরা
কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান অনুসারে ডিম ব্যবসায়ীরা কোনো কারণ ছাড়াই কারসাজির মাধ্যমে এক সপ্তাহে ১৪০ কোটি টাকা সাধারণ মানুষের পকেট থেকে অতিরিক্ত মুনাফা নিয়ে গেল।

এখানেই তো থেমে নেই, বাজারে এখনো কারসাজি চলছে। ডিমের দাম তো কমছেই না। একটা কোনোভাবেই যৌক্তিক না। বাজারে এই অবস্থার জন্য প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরসহ বাজার মনিটরিং টিম দায়ী বলে মনে করেন তিনি।

যেভাবে বাড়ানো হয় ডিমের দাম: অনুসন্ধানে দেখা যায়, করপোরেট চক্রটি কোরবানি ঈদের এক সপ্তাহ পর থেকে ডিমের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা নেয়। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী খুচরা বাজারে গত ৭ জুলাই থেকে দাম বাড়াতে শুরু করে। খন্দকার মুহাম্মদ মহসিনের সংগঠন বিপিআইএ’র ফেসবুক পেজে গত ৬ জুলাই ডিমের দাম প্রকাশ করা হয় ৯ টাকা ৯০ পয়সা।

৩ আগস্টের পর থেকে ডিমের দাম বাড়াতে শুরু করে করপোরেট ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিপিআইএ। সংগঠনের কর্মকর্তা শিমুল হক রানা ১৩ আগস্ট গ্রুপটিতে লাল ডিমের দাম ৫০ টাকা হালি অর্থাৎ প্রতিটি ডিম ১২ টাকা ৫০ পয়সা করে নির্ধারণ করেন। শিমুলের ফেসবুক পোস্টে বলা হয়, পোলট্রি পণ্য (ডিম ও মুরগি), আজ খামারিদের প্রাপ্ত মূল্য (টাকা) নিম্নরূপ- তারিখ : ১৩/০৮/২০২৩ ইং। এখানে বর্ণিত পোলট্রি পণ্যের মূল্য মূলত পোলট্রি খামারিদের প্রাপ্ত মূল্য। ইউনাইটেড এগ (সেল পয়েন্ট) লাল ডিম ৫০ টাকা হালি, সাদা ডিম ৫০ টাকা হালি
সেখানে বলা হয়, পোলট্রি পণ্য (ডিম ও মুরগি), আজকের খামারিদের কাছ থেকে প্রাপ্ত মূল্য (টাকা) নিম্নরূপ- তারিখ : ০৬/০৭/২০২৩ ইং। এখানে বর্ণিত পোলট্রি পণ্যের মূল্য মূলত পোলট্রি খামারিদের প্রাপ্ত মূল্য। স্পেশাল কোয়ালিটির ডিম- ইউনাইটেড এগ (সেল পয়েন্ট) লাল ডিম ১০.৮০ টাকা (খুচরা), সাদা ডিম ৯.৮০ টাকা (খুচরা)। ডাম্পিং মার্কেট- (সাধারণ কোয়ালিটি) লাল (বাদামি) ডিম ৯.৯০ টাকা, সাদা ডিম ৮.৯০ টাকা।

পরের দিন অর্থাৎ ৭ জুলাই লাল ডিমের দাম ১০ পয়সা করে বাড়িয়ে ১০ টাকা করা হয়। সাদা ডিম বিক্রির জন্য ২০ পয়সা বাড়িয়ে ৯ টাকা ১০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। পরের দিন ৮ জুলাই ডিমপ্রতি ২০ পয়সা বাড়ানো হয়। লাল ডিম বিক্রির জন্য নির্ধারণ করা হয় ১০ টাকা ২০ পয়সা। সাদা ডিম ৯ টাকা ৩০ পয়সা।

৯ জুলাই ৩০ পয়সা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয় ১০ টাকা ৫০ পয়সা। সাদা ডিম নির্ধারণ করা হয় ৯ টাকা ৬০ পয়সা। একইভাবে ৩১ জুলাই খুচরা বাজারে লাল ডিমের দাম বাড়িয়ে করা হয় ১১ টাকা। সাদা ডিমের দাম নির্ধারণ করা হয় ১০ টাকা ৭০ পয়সা। অর্থাৎ ২০ দিনে প্রতিটি লাল ডিম ১ টাকা ১০ পয়সা করে বাড়ানো হয়।

করপোরেট গ্রুপের শীর্ষ প্রতিষ্ঠান কাজী ফার্মের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কাজী জাহিদুল হাসান ও প্যারাগন গ্রুপের কর্ণধার মশিউর রহমানের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তারা রিসিভ করেননি
দ্বিতীয় দফা অর্থাৎ ৩ আগস্টের পর থেকে ডিমের দাম বাড়াতে শুরু করে করপোরেট ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিপিআইএ। সংগঠনের কর্মকর্তা শিমুল হক রানা ১৩ আগস্ট গ্রুপটিতে লাল ডিমের দাম ৫০ টাকা হালি অর্থাৎ প্রতিটি ডিম ১২ টাকা ৫০ পয়সা করে নির্ধারণ করেন।

শিমুলের ফেসবুক পোস্টে বলা হয়, পোলট্রি পণ্য (ডিম ও মুরগি), আজ খামারিদের প্রাপ্ত মূল্য (টাকা) নিম্নরূপ- তারিখ : ১৩/০৮/২০২৩ ইং। এখানে বর্ণিত পোলট্রি পণ্যের মূল্য মূলত পোলট্রি খামারিদের প্রাপ্ত মূল্য। ইউনাইটেড এগ (সেল পয়েন্ট) লাল ডিম ৫০ টাকা হালি, সাদা ডিম ৫০ টাকা হালি।

প্রতিদিন এ গ্রুপে মূল্যের তালিকা প্রকাশের পর ডিম বিক্রেতাদের শহর ও নগরের যত গ্রুপ রয়েছে সেগুলোতে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। সেই মূল্য অনুসারে ডিম কেনা-বেচা হয়। করপোরেট ব্যক্তিদের কাছ থেকে ডিলার, পাইকার ও খুচরা বাজারে ধাপে ধাপে ডিমের দাম বাড়তে থাকে। সর্বশেষ এ ডিম ভোক্তা-পর্যায়ে ১৫ টাকা পিস হিসেবে কিনতে হচ্ছে।

কৃত্রিমভাবে সংকট তৈরি করে গায়েবি এসএমএস-এর মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে করপোরেট গ্রুপ। তারাই ডিমের দাম বাড়িয়েছে।প্রান্তিক খামারিদের ইচ্ছাকৃতভাবে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যেমন- আমাদের যখন ডিম ছিল, তখন কোম্পানিগুলো ইচ্ছা করে দাম কমিয়ে দেয়। এখন আমাদের হাতে ডিম নেই, দাম বাড়িয়ে দিয়েছে
বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) সভাপতি সুমন হাওলাদার
এ বিষয়ে করপোরেট গ্রুপের শীর্ষ প্রতিষ্ঠান কাজী ফার্মের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কাজী জাহিদুল হাসান ও প্যারাগন গ্রুপের কর্ণধার মশিউর রহমানের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তারা রিসিভ করেননি।

কাজী ফার্ম, প্যারাগন, নারিশ গ্রুপই ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে— এমন অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) সভাপতি সুমন হাওলাদার। তিনি বলেন, ‘কৃত্রিমভাবে সংকট তৈরি করে গায়েবি এসএমএস-এর মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে করপোরেট গ্রুপ। তারাই ডিমের দাম বাড়িয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘প্রান্তিক খামারিদের ইচ্ছাকৃতভাবে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যেমন- আমাদের যখন ডিম ছিল, তখন কোম্পানিগুলো ইচ্ছা করে দাম কমিয়ে দেয়। এখন আমাদের হাতে ডিম নেই, দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।’

‘করপোরেট গ্রুপ কখনও বাজারে সংকট কমাবে না, তারা বাজারে সিন্ডিকেট করতে পারবে কিন্তু পণ্য দিতে পারবে না। কারণ, তাদের হাতে বাজারের পণ্য রয়েছে মাত্র ২০ শতাংশ। ৮০ শতাংশ পণ্য রয়েছে প্রান্তিক খামারিদের হাতে। বাজার স্থিতিশীল রাখতে হলে উৎপাদন খরচের ওপর ভিত্তি করে সরকারকে ডিমের ন্যায্যমূল্য নির্ধারণ করে দিতে হবে। তবেই প্রান্তিক খামারিরা বেঁচে থাকবেন।’

গরম ও ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার কারণে খামার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে— উল্লেখ করেন সুমন হাওলাদার বলেন, ‘দেশে ২০ হাজার খামার রয়েছে। এর মধ্যে ১২ হাজার খামার চালু। গত এক বছরে আট হাজার খামার বন্ধ হয়েছে। ফলে ডিমের সংকট তৈরি হয়েছে। চাহিদার ওপর ভিত্তি না করে উৎপাদন খরচের বিষয়টি মাথায় রেখে দাম নির্ধারণ করলে ডিমের দাম বাড়বে না।’

মাগুরার প্রান্তিক খামারি ওবায়দুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘মাস দুয়েক আগেও ডিমের উৎপাদন খরচ ছিল ১১ টাকা। ডিম বিক্রি করেছি ১০ টাকা অর্থাৎ ১ টাকা লস। এখন একটু লাভ হয়েছে। আমার পরিচিত অনেক খামারি লস করতে করতে মুরগি বিক্রি করে দিয়েছেন।

ছয় বছর ধরে এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত— উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রান্তিক খামারিদের ন্যায্যমূল্য দিতে না পারলে বাজার কখনও স্থির হবে না। পণ্যের দাম কমবে, বাড়বে— এমন চিত্র চলতেই থাকবে।’

তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজী আমানত উল্লাহ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘মাছ-মাংসের দাম বাড়ায় এমনিতেই ডিমের ওপর চাপ বেশি। তারপর এখন বর্ষাকাল, সবজির দামও বেশি। সবমিলিয়ে ডিমের চাহিদা বেড়েছে। তাই দামও বেড়েছে। তবে, আমাদের পর্যাপ্ত উৎপাদন আছে, ঘাটতি নেই।’

মাস দুয়েক আগেও ডিমের উৎপাদন খরচ ছিল ১১ টাকা। ডিম বিক্রি করেছি ১০ টাকা অর্থাৎ ১ টাকা লস। এখন একটু লাভ হয়েছে। আমার পরিচিত অনেক খামারি লস করতে করতে মুরগি বিক্রি করে দিয়েছেন। প্রান্তিক খামারিদের ন্যায্যমূল্য দিতে না পারলে বাজার কখনও স্থির হবে না। পণ্যের দাম কমবে, বাড়বে— এমন চিত্র চলতেই থাকবে

দাম বাড়ানোর কারণ জানতে চাইলে পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মুহাম্মদ মহসিন বলেন, ‘বেশকিছু দিন প্রচণ্ড গরম ছিল। খামারে অনেক মুরগি মারা গেছে। পাশাপাশি বৈরী আবহাওয়ার কারণে খাল-বিল, সাগর-নদী থেকে মাছ আহরণ কমেছে। বাজারজাতও কম হয়েছে। এছাড়া ভোক্তা-পর্যায়ে কিছু রুচির পরিবর্তন হয়েছে। বৃষ্টির কারণে এখন ডিম-খিচুড়ি খাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। গ্রামীণ জনপদ থেকে ডিম আসা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। সবকিছু মিলে ডিমের ঘাটতি ছিল। বাজারে ডিমের চাহিদা চার কোটি ৭০ লাখ। এমনিতে আমাদের উৎপাদন ৩০ থেকে ৩৫ লাখ কম ছিল। ফলে বাজার অস্থিতিশীল হয়েছে।

‘আবহাওয়া ঠিক হলে এমনিতেই বাজার স্বাভাবিক হয়ে যাবে। আগামীকাল থেকে আবহাওয়া ভালো হলে ডিমের দামও কমতে থাকবে।’

Spread the love

Leave a Reply

Specify Facebook App ID and Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Facebook Login to work

Specify Twitter Consumer Key and Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Twitter Login to work

Specify LinkedIn Client ID and Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for LinkedIn Login to work

Specify Youtube API Key in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Youtube Login to work

Specify Google Client ID and Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Google and Youtube Login to work

Specify Instagram App ID and Instagram App Secret in the Super Socializer > Social Login section in the admin panel for Instagram Login to work

Your email address will not be published. Required fields are marked *