যারা ব্যবসা পরিচালনায় অসাধু পন্থা অবলম্বন করে তাদের শনাক্ত করে শাস্তি নিশ্চিতের দাবি করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
বুধবার (২৩ আগস্ট) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত আলোচনা সভায় এমন মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র বলেন, আমাদের তৈরি পোশাক খাতের কমপ্লায়েন্স বৈশ্বিক স্বীকৃতি অর্জন করেছে এবং অন্যান্য খাতেও কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে হবে। দেশে ব্যবসা ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে সহায়ক নীতিমালা নিশ্চিতকরণ একান্ত অপরিহার্য।
তিনি বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) আরও সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। ব্যবসা পরিচালন ব্যয় হ্রাসে সংশ্লিষ্ট নীতিমালাসমূহ দ্রুত সংস্কার একান্ত আবশ্যক। আর যারা ব্যবসা পরিচালনা অসাধু পন্থা অবলম্বন করছেন, তাদেরকে শনাক্ত করে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
উত্তর সিটি মেয়র আরও বলেন, আমাদের ব্যবসায়িক কাজে প্রয়োজনীয় ‘স্যাম্পল’ ছাড়াকরণে যদি সময় বেশি লাগে, তাহলে ব্যবসা চলে যাবে ভিয়েতনামসহ প্রতিযোগী অন্যান্য দেশসমূহে, তাই এক্ষেত্রে সহজীকরণের কোনো বিকল্প নেই।
সিটি কর্পোরেশনে সকল সেবা দ্রুতসময়ে ও স্বচ্ছতার সঙ্গে নিশ্চিতের লক্ষ্যে ‘সবার ঢাকা’ অ্যাপস চালু করা হয়েছে এবং নগরবাসীকে তা ব্যবহারের আহ্বান জানান।
মেয়র আতিক বলেন, উত্তর সিটি কর্পোরেশন অঞ্চলে স্টার্ট আপ উদ্যোক্তাদের জন্য ‘পিও’ বক্স প্রবর্তনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে এবং উত্তর সিটি কর্পোরেশন আওতাভুক্ত অঞ্চলের জন্য ট্রেড লাইসেন্স প্রাপ্তি সেবা অনলাইনে আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে, যেটি উদ্যোক্তাদের সময় ও ব্যয় হ্রাসে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।
তিনি বলেন, উত্তর সিটি কর্পোরেশনের গুলশান-২-এর ট্রাফিক সিগন্যালগুলো ‘এআই’র মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে এবং পর্যায়ক্রমে অন্যান্য জায়গায় তা বাস্তবায়ন করা হবে। ইলেকট্রনিক বাস সার্ভিস চালুকরণে লক্ষ্যে বাস আমদানি ও রুট পার্মিট প্রদানে ক্ষেত্রে উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ হতে সকল সহযোগিতা প্রদান করা হবে এ ব্যাপারে উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসতে হবে।
অনুষ্ঠানে আলোচনায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (রিস্ক ম্যানেজমেন্ট) ড. শারমিন সামাদ, কনজুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) কোষাধ্যক্ষ ড. মো. মনঞ্জুর-ই-খোদা তরফদার, শ্রম অধিদপ্তরের পরিচালক মো. বেলাল হোসেন শেখ, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপমহাপরিদর্শক মো. মেহেদী হাসান, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সদস্য শীষ হায়দার চৌধুরী, এনডিসি, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান এবং বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) মহাপরিচালক মো. আব্দুস সাত্তার অংশগ্রহণ করেন।
ক্যাবের কোষাধ্যক্ষ ড. মো. মনঞ্জুর-ই-খোদা তরফদার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের মধ্যকার ‘ইকো-ফ্রেন্ডলি বিজনেস এনভায়রনমেন্ট’ নিশ্চিতকরণের ওপর জোরারোপ করেন।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপমহাপরিদর্শক মো. মেহেদী হাসান বলেন, এ অধিদপ্তর হতে দোকান পরিদর্শন করা হলে মূলত ২৫টি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয় এবং বর্তমানে অনলাইনেই কলকারখানা অধিদপ্তরের লাইসেন্স প্রাপ্তি সম্ভব।
বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সদস্য শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, এলসিডি পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও বাণিজ্য সম্প্রসারণে ইন্দোনেশিয়া-বাংলাদেশের মধ্যকার একটি পিটিএ স্বাক্ষর প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে এবং জাপানের সঙ্গে ‘ইকোনেমিক পার্টনারশিপ’ চুক্তি স্বাক্ষরে কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, অসাধু চক্রের কারণে আমাদের সৎ ও সত্যিকারের ব্যবসায়ীরা কোণঠাসা হয়ে পড়েছে, যা রোধে সকলের যৌথ ও সমন্বিত উদ্যোগ একান্ত অপরিহার্য।