সবজির বাজারে আগুন লেগেছে। কোনো সবজিই পাওয়া যাচ্ছে না ৭০-৮০ টাকার কমে। সপ্তাহের ব্যবধানে বেগুন ও বরবটির দাম ১০০তে দাঁড়িয়েছে। তবে বাজারে সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে টমেটো, যার দাম গিয়ে দাঁড়িয়েছে প্রতি কেজি ১২০ টাকা। সব মিলিয়ে বাজারে সব ধরনের সবজির দাম বাড়তি। ফলে সবজি কিনতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে সাধারণ ক্রেতাদের।
শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গোল সবুজ বেগুন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১০০ টাকায়। তবে লম্বা বেগুন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০ টাকায়। বরবটি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। প্রতি কেজি করলা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, পটল প্রতি কেজি ৬০ টাকায়, ঢেঁড়স প্রতি কেজি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে সবজির মধ্যে সবচেয়ে কম দাম বলতে পেঁপে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। এছাড়া ঝিঙা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, প্রতি পিস জালি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, লাউ প্রতি পিস ৭০ টাকায়। কাঁচা কলা প্রতি হালি (৪টি) ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, বাজারে মূলা প্রতি কেজি ৬০ টাকা, ধুন্দল প্রতি কেজি ৬০ টাকা, কচুর মুখি প্রতি কেজি ৮০ টাকা, কচুর লতি প্রতি কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া বাজারে নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫৫ টাকায়, এছাড়া আগের আলু প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫৫ টাকায়। অন্যদিকে দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায় আর আমদানি করা পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকায়।
এদিকে কাঁচা বাজারে সব ধরনের সবজির দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সাধারণ ক্রেতারা। রাজধানীর মহাখালী কাঁচা বাজারে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী রাজিব আহমেদ বলেন, সবজির দামও যদি ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যায় তাহলে আমরা খাব কী? পেঁপে ছাড়া বাজারে সব সবজি ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলুও কিনিতে হয় ৫০ টাকা কেজিতে। এত দাম হলে আমরা সাধারণ ক্রেতারা তো মাছ মাংসের মতো সবজিও কিনতে পারব না। এছাড়া বরবটি, বেগুন, টমেটো তো বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। সব মিলিয়ে এমন দাঁড়িয়েছে যে এখন সবজি কিনে খাওয়াও বিলাসিতা হয়ে যাচ্ছে।
সাধারণ মানুষের আমিষের চাহিদার অন্যতম উৎস মাছের দামে নেই স্বস্তি। পাঙ্গাস বাদে বেড়েছে অন্যান্য মাছের দাম। পাশাপাশি ডিমের দামও রয়েছে ঊর্ধ্বমুখী। ডজনপ্রতি ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়।
শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজারে গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ মাছের দাম বেশি।বাজারে দেশি রুই বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৭০০ টাকা কেজি, চাষের রুই ৩৫০ টাকা, ইলিশ প্রতি কেজি ১৮০০ টাকা, ট্যাংরা ১২০০ টাকা, বোয়াল মাছ ১৩০০ টাকা, দেশি শিং ১০০০ টাকা, চাষের শিং ৪০০-৫০০ টাকা, কাচকি ৭০০ টাকা, পাবদা ৬০০ টাকা, বাইলা ১০০০ টাকা, রূপচাঁদা ১১০০ টাকা, মলা মাছ ৬০০ টাকা। এছাড়া গরিবের মাছ পাঙ্গাস বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ২০০ টাকায়।
দাম বেশি থাকা প্রসঙ্গে বিক্রেতা খলিল মিয়া বলেন, আমাদের এখানে বেশিরভাগই মাছ ভালো মানের ও দেশী জাতের, তাই দামটা বেশি। যে আড়ত থেকে মাছ আনা হয়, সেখানেই দাম বেশি। আর আগের চেয়ে সাপ্লাই কিছুটা কমে গেছে। তবে আমাদের এখানে বেশিরভাগ মাছই ভালোমানের ও দেশি জাতের।
অতিরিক্ত দামে মাছ কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন ক্রেতারা। লালমাটিয়ার বাসিন্দা জাকির হোসেন বলেন, মাছের এতো দাম দেখে ভড়কে গিয়েছি। এই দামে মাছ কিনলে তো বাকি মাস চলতে পারব না।
আরেক ক্রেতা সৈয়দ তারিকুল ইসলাম বলেন, এসেছিলাম একটু বেশি করে মাছ কিনে নিয়ে যেতে। তবে যে দাম, সেক্ষেত্রে হয়ত বাজেটের অর্ধেক কিনতে হবে।
অপরদিকে ডিমের দামও রয়েছে বাড়তির দিকে। ফার্মের ডিম ডজনপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়, দেশি ডিম ১৮০ টাকা, হাঁসের ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি ডজন ২১০ টাকায়।
মাংসের বাজারে গেলে দেখা যায়, ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৭৫ টাকা, পাকিস্তানি মুরগি ৩১০ টাকা, দেশি মুরগি ৪০০ টাকা। এছাড়া গরুর মাংস ৮০০ টাকা ও খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৯৫০ থেকে ১০০০ টাকায়।
গরুর মাংস বিক্রেতা আবদুল্লাহ বলেন, মাংসের দাম আগের মতোই আছে। অন্যান্য দিন কম বিক্রি হলেও শুক্রবারে একটু ভালো বিক্রি হয়।