
আগামী কয়েক বছরে বাংলাদেশে কৃষির আধুনিকায়ন এবং উন্নত প্রযুক্তির সংযোগ ঘটাতে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ প্রয়োজন বলে আন্তর্জাতিক অর্থায়ন সংস্থাগুলোকে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক।
মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) ইতালির রোমে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) বিশ্ব খাদ্য ফোরামের ‘বিনিয়োগ সম্মেলনের’ উদ্বোধন অনুষ্ঠান ও পরবর্তী সেশনে একথা বলেন মন্ত্রী।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশের কৃষি খাতে বিনিয়োগ করতে উন্নত দেশ, আন্তর্জাতিক ব্যাংক, ঋণ দাতা সংস্থা এবং বেসরকারি উদ্যোক্তাদের আহ্বান জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, এ বছর জুলাই পর্যন্ত এ খাতে ৪৫ হাজার কোটি টাকার (৪.৪ বিলিয়ন ডলার) বেশি বিনিয়োগ করা হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি বিনিয়োগ ৩০ হাজার ২০০ কোটি টাকা, বাকিটা উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার।
সম্প্রতি বিশ্ব ব্যাংক ও ইফাদ পার্টনার ৫ হাজার ৭৬০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। তারপরও এই মুহূর্তে কৃষি খাতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ প্রয়োজন। আগামী কয়েক বছরে এই খাতে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ প্রয়োজন।
এফএওর মহাপরিচালক কিউ দোংয়ু, চিফ ইকনমিস্ট টরেরো কুলেনসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ব্যাংক, দাতা সংস্থা ও বেসরকারি উদ্যোক্তা প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
কৃষিতে বিনিয়োগ বিষয়ে বাংলাদেশের নির্ধারিত সেশনে মন্ত্রী দেশের কৃষিখাতে বিনিয়োগ পরিকল্পনা, প্রয়োজনীয়তা ও সম্ভাবনার বিষয়গুলো তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিকল্পনায় কোল্ড স্টোরেজ স্থাপন ও সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনা, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিপণন, ক্লাইমেট স্মার্ট এগ্রিকালচার, সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা, দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি ও চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রযুক্তি ব্যবহার– এই ছয়টি খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। এসব খাতে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ২০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ প্রয়োজন।
তিনি বলেন, দেশে পেঁয়াজ, আম ও টমেটোসহ শাকসবজি সংরক্ষণের এখনো তেমন প্রযুক্তি নেই, কোল্ড স্টোরেজ নেই। এসব পণ্য সংগ্রহোত্তর পর্যায়ে ২৫ থেকে ৪০ শতাংশ নষ্ট হয়ে যায়। সেজন্য দ্রুত ২০০ টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন ১১০০টি মাল্টিপারপাস কোল্ড স্টোরেজ স্থাপনে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ প্রয়োজন।
কৃষিখাতের রূপান্তরে বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে কাজ করছে এফএও। সেজন্য এফএও ১৭ অক্টোবর থেকে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত চার দিনব্যাপী এই ‘বিনিয়োগ সম্মেলনের’ আয়োজন করেছে।
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ৩২টি দেশ এ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করছে, যাদের কৃষিখাতে বিদেশি বিনিয়োগের বেশি প্রয়োজন।
এছাড়া, বিশ্বব্যাংক, আরব ব্যাংক, আন্তঃআমেরিকান উন্নয়ন ব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, লাতিন আমেরিকা উন্নয়ন ব্যাংকসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ব্যাংক, দাতা সংস্থা ও বেসরকারি উদ্যোক্তা প্রতিনিধিরা অংশ নিচ্ছেন সম্মেলনে।