যাত্রা শুরুর পর মাত্র চার বছরেই দেশের সবচেয়ে দ্রুতগতির ‘ইউনিকর্ন’ স্টার্টআপ বা ১০ হাজার কোটি টাকার কোম্পানি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে সাড়া জাগানো মোবাইল আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান নগদ। শনিবার (২৯ জুলাই) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে এ বিষয়ক সরকারি স্বীকৃতি ‘ফাস্টেস্ট টু ইউনিকর্ন অ্যাওয়ার্ড’ গ্রহণ করেছেন নগদ লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক।
রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানি ‘স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড’ আয়োজিত ‘বাংলাদেশ স্টার্টআপ সামিট ২০২৩’ অনুষ্ঠানে নগদকে এ স্বীকৃতি দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে আটটি ক্যাটাগরিতে আটটি প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার দেওয়া হয়।
মানুষের জীবন বদলে দেওয়ার মিশন নিয়ে ২০১৯ সালের ২৬ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর হাতে উদ্বোধন হয় নগদ-এর। এরপর একে একে চমকপ্রদ সব উদ্ভাবন দিয়ে গ্রাহকদের তাক লাগিয়ে দিয়েছে নগদ। তারই ধারাবাহিকতায় চার বছরের মধ্যে দেশের সবচেয়ে দ্রুতগতির এক বিলিয়ন ডলারের (দশ হাজার কোটি টাকার) স্টার্টআপ কোম্পানি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করে প্রতিষ্ঠানটি।
এক দশক আগে বিশ্বব্যাপী ইউনিকর্ন স্টার্টআপের ধারণার শুরু হয়। এ ধারায় একটি স্টার্টআপের সামগ্রিক মূল্যমান ১০০ কোটি ডলারের সমান হলেই তাকে ইউনিকর্ন কোম্পানি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বর্তমানে বিশ্বে ১ হাজার ২০০টির মতো ইউনিকর্ন স্টার্টআপ রয়েছে।
ইউনিকর্ন স্টার্টআপকে স্বীকৃতি দেওয়ার এমন আয়োজন দেশে এবারই প্রথম। আর সে আয়োজনে প্রথম স্বীকৃতি পেল ডাক বিভাগের সহযোগী মোবাইল আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান নগদ।
সামিটে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এতে বাংলাদেশে স্মার্ট অর্থনীতি গড়ে তুলতে নগদের অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি।
সেবা শুরুর চার বছরের মধ্যে নগদ আট কোটি গ্রাহকের মাইলফলক অর্জন করেছে। এছাড়া এখন নগদের দৈনিক গড় লেনদেন ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকায় পৌঁছে গেছে। দেশে প্রথমবারে মতো ইলেক্ট্রনিক কেওয়াইসি’র প্রচলন বা যেকোনো মোবাইল ফোন থেকে *১৬৭# ডায়াল করে অ্যাকাউন্ট খোলার পদ্ধতি চালু করে বিপুল জনপ্রিয়তা পায় নগদ। পাশাপাশি বিনামূল্যে বা নামমাত্র মূল্যে সেবা চালু করে গ্রাহকদের ভালোবাসা অর্জন করে প্রতিষ্ঠানটি। আর এসবই নগদকে দ্রুতগতির ইউনিকর্ন কোম্পানি হতে সহায়তা করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে স্বীকৃতি গ্রহণের পর নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক বলেন, ‘নগদ পরিবার ও আমার জন্য আজকের এ দিনটি অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে। এ অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। যে স্বপ্ন নিয়ে আমরা যাত্রা শুরু করেছিলাম, প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তার স্বীকৃতি পেলাম। আর কিছু চাওয়ার থাকতে পারে না।’
তিনি বলেন, ‘দেশীয় একটি কোম্পানির এ পর্যন্ত আসতে স্বপ্ন দেখিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়, তার প্রতি আমাদের অশেষ ধন্যবাদ। একই ধারাবাহিকতায় নগদ একদিন বাংলাদেশের প্রথম ডেকাকর্ন কোম্পানি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’
কোম্পানির মূল্যমান ১০ বিলিয়ন ডলার পেরুলেই তাকে ডেকাকর্ন কোম্পানির মর্যাদা দেওয়া হয়। এ মুহূর্তে বিশ্বে এ ধরনের কোম্পানি আছে হাতে গোনা কয়েকটা।
বর্তমানে সরকারের প্রাথমিক শিক্ষা উপবৃত্তি বিতরণসহ, বয়স্ক ও বিধবা, প্রতিবন্ধী ভাতাসহ বিভিন্ন ধরনের সরকারি অনুদান নগদের মাধ্যমে বিতরণ করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ২৫ হাজার কোটি টাকার বেশি সরকারি ভাতা উপকারভোগীর কাছে পৌঁছে দিয়েছে নগদ। দেশে একটি কার্যকর স্মার্ট লেনদেন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে দেশের ফিনটেক জগতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা সেবা নগদ।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব ও স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড-এর পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মো. সামসুল আরেফিন এবং স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি আহমেদ।