মৌলভীবাজারে ৪ বছর পর সেলিম হত্যার বিবরণ দিল হত্যাকারীরা
শেখ সাহেদ মিয়া। মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারে প্রায় ৪বছর পর সেলিমকে নির্মমভাবে হত্যার বিবরণ দিল ৩ হত্যাকারী দোকান কর্মচারী মামুন (২২), ইছহাক (২৪) ও সিএনজি ড্রাইভার আতিকুল ইসলাম (গিয়াস মিয়ার কলোনীর বাসিন্ধা)। মামুন মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ইসলামপুর এলাকার আবুল কালামের পুত্র। ও ইছাক মিয়া ভাদগাঁও এলাকার ( শাহ অদুদ মিয়া লন্ডনীর কেয়ার টেকার)। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে আটক ৩জন সেলিমকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে।
সিআইডি পুলিশ সেলিমের বাই সাইকেল আলামত হিসাবে আসামীর বাড়ীর একটি রুমের ঢালাই ভেঙ্গে উদ্ধার করেছে। ১৬ মার্চ হবিগঞ্জ সিআইডি পুলিশ পরিদর্শক মোঃ আব্দুর রাজ্জাক আদালাতের মাধ্যমে মামলার সুষ্ঠ তদন্তের স্বার্থে আসামী ইছহাক এর রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানী শেষে মৌলভীবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্টেট ১নং আমলী আদালত আসামী ইছহাক এর ২দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা হবিগঞ্জ সিআইডি পুলিশ পরিদর্শক মোঃ আব্দুর রাজ্জাক জানান- গত ১৫/০৬/২০১৬ইং সন্ধা সাড়ে ৭টার দিকে ( শাহ অদুদ লল্ডনীর বাড়ীর কেয়ারটেকার) ইছহাক সেলিমকে লন্ডনীর বাসায় যাবার জন্য বলে। তার কতামত সেলিম সেখানে গিয়ে তাকে না পাওয়ায় সে ফেরৎ আসে।
পরবর্তীতে ইছহাক এর দোকান কর্মচারী মামুন এর মাধ্যমে সেলিমকে লন্ডনীর বাসায় আসার কথা বললে সে সরল বিশ্বাসে আসে। সেখানে বাইসাইকেলটি ভিতরে রেখে বাসার ভেতরে ঢুকতেই মামুন ও ইছহাক ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে দেয়। এবং তাকে পিঠিয়ে হত্যা করে। এ সময় তার মূত্যু নিশ্চিত করতে একটি দারালো চুরি দিয়ে পেটেসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। এবং লাশটি নীল কালারের পলিথিন দিয়ে মোড়ানোর পর একটি চটের বস্থায় বস্তা বন্দি করে। এবং সিএনজি ড্রাইভার আতিকুল ইসলামকে লাশ গুম করার জন্য মোবাইল ফোনে বাসায় ডাকে। লোকজন তারাবীর নামাজে যাবার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। দোকান কর্মচারী মামুন , ইছহাক ও সিএনজি ড্রাইভার আতিকুল ইসলাম সম্মিলিত ভাবে লাশটি তার সিএনজি যোগে নতুন ব্রীজ এলাকার ক্যানেলের পাশের ক্ষেতের জমিতে ফেলে দেয়। ঘঠনার ২দিন পর লাশটি ফুলে ভেসে উঠে ।
এ সময় স্থানীয় এলাকাবাসী পুলিশকে সংবাদ দিলে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে। এ ঘঠনায় মৃত সেলিম মিয়ার স্ত্রী মোছাঃ রেজিয়া আক্তার বাদী হয়ে অপ্সাতনামাদের আসামী করে মৌলভীবাজার মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলাটি দীর্ঘদিন মৌলভীবাজার মডেল থানার পুলিশ ও মৌলভীবাজার সিআইডি পুশিশের তদন্তে কোন প্রকার অগ্রগতি হয়নি। সর্বশেষ গত ০১/০৩/২০২০ইং পুলিশ হেডকোয়াটার এর নির্দেশে মামলাটি সুষ্ঠ তদন্তের স্বার্থে হবিগঞ্জ সিআইডি পুলিশের হাতে হস্তান্তর করে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হবিগঞ্জ সিআইডি পুলিশ পরিদর্শক মোঃ আব্দুর রাজ্জাক মামলাটি অতি দ্রুত পর্যালোচনা, পূর্বে তদন্ত কর্মকর্তা ডকেট পর্যালোচনা এবং মোবাইলের সিডিআর ( কল ডাটা রেকর্ড) এর সুত্র ধরে প্রথমে সিএনজি ড্রাইভার আতিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করেন। এবং প্রাথমিক জিঙ্গাসাবাদে সেলিম হত্যার কথা স্বীকার করে। তার দেয়া তথ্য মতে ইছাক ও মামুনকে গত ১০/০৩/২০২০ইং বিকাল ৪টার দিকে গ্রেফতার করা। পরবর্তীতে ইছহাক মিয়ার স্বীকারোক্তি অনুয়ায়ী ভিকটিম সেলিমের বাই সাইকেলটি বাথরুম ও রান্না ঘরের ফল চাঁদ থেকে ঢালাই ভেঙ্গে উদ্ধার করা হয়।