গতকাল সকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তলোন বেলুন শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে কাউন্সিলের উদ্বোধন করা হয়।
প্রধান অতিথি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান এমপি বলেন আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন দেখে বিএনপির মাথা খারাপ হয়ে গেছে। বিএনপি জামাত গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নামে সংঘটিত হচ্ছে। শ্রমিক কর্মচারী ছাড়া রাষ্ট্র উন্নত হতে পারেনা। আগামী নির্বাচনে আবারও সকলকে সাথে নিয়ে শেখ হাসিনা সরকারকে ক্ষমতায় নিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি মো. হেদায়েত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লক্ষীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাভোকেট নুরউদ্দীন চৌধুরী নয়ন, দৈনিক ঢাকা টাইমসের সম্পাদক আরিফুর রহমান দোলনসহ অন্যন্যরা। কাউন্সিল শেষে আগামী তিন বছরের জন্য বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটি ও ঢাকা মহানগরের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। কেন্দ্রীয় কমিটিতে সভাপতি নির্বাচিত হন মোঃ আকতার হোসেন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন মুহাম্মদ খলিলুর রহমান ভূঁইয়া।
সাবেক মন্ত্রী বলেন, শ্রমিক কর্মচারী ছাড়া দেশের কোনো উন্নয়ন হতে পারে না। বঙ্গবন্ধু শ্রমিকদের জন্য আন্দোলন করেছিলেন। তার কন্যা শেখ হাসিনাও শ্রমিক বান্ধব সরকার। তিনি দেশের শ্রমজীবি মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। শেখ হাসিনার সরকারই শ্রমিকদের বেতন বাড়িয়েছেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফ এর কথা উল্লেখ করে তিন বলেন, চীন, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়ার থেকেও বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি অনেক ভালো। আগামী বছর বাংলাদেশের জিডিপি দাঁড়াবে ছয় পার্সেন্ট, পরবর্তীতে আরও বাড়বে। চীন, ভিয়েতনাম থেকেও বাংলাদেশের জিডিপি আরও প্রবৃদ্ধি বেশি হবে। তারপরও বিএনপি এটা নিয়ে মিথ্যাচার করছে। আইএমএফ শেখ হাসিনার নেতৃত্বের উন্নয়নের প্রশংসা করেছে। কিন্তু বিএনপি কোন কিছু ভালো চোখে দেখে না। চোখ খারাপ হলে যা হয়। বিএনপি ক্ষমতা দখল করে দেশের মধ্যে স্বৈরাচারী শাসন কায়েম করেছিল। তাই বিএনপি উন্নয়ন চোখে দেখে না। আমরা একবার তাদের চোখের অপারেশন করে দিয়েছিলাম। আবারও তাদের চোখের অপারেশন করাবো।
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ১৯৯২ সালে আমি যখন সংসদ সদস্য ছিলাম তখন প্রথম পদ্মা সেতু করার প্রস্তাব করেছিলাম। কিন্তু তখন বিএনপির বলেছিল তারা করবে ,তারপর দীর্ঘদিন ক্ষমতা থাকার পরও তারা পদ্মা সেতুর একটা পিলার করতে পারেনি। প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা যখন পদ্মা সেতু করছেন তখনই বিএনপি-জামায়াত আবার ষড়যন্ত্র করেছে। বিএনপি ষড়যন্ত্র করে বিশ্ব ব্যাংকের পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধ করেছিল। কিন্তু কানাডার আদালতে প্রমাণিত হয়েছে কোন দুর্নীতি হয়নি। সেই কানাডার আদালতেই বিএনপিকে সন্ত্রাসী রাজনৈতিক দল হিসেবে ঘোষণা করেছে।
বিএনপি’র লুটপাট দুর্নীতি করে কথা উল্লেখ করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে সর্বপ্রথম এক ব্যক্তিকে আমেরিকার স্যাংশন দিয়েছিল। সেই ব্যক্তিটি হল তারেক রহমান। তারেক রহমান বাংলাদেশে দুর্নীতি লুটপাট করেছিল বলে আমেরিকা তার উপরে স্যাংশন দিয়েছিল। তখন আমেরিকা বলেছিল তারেক রহমান বাংলাদেশের একমাত্র ব্যক্তি, যাকে আমেরিকার ভিসা দেবে না। তারপরও কেন বিএনপি বার বার ভিসা নীতি নিয়ে এতো লাফালাফি করছে। এ ভিসা নীতি নিয়ে তাবিজ বানিয়ে ভিজিয়ে পানি খেতে থাকুক বিএনপি, আর আমরা (আওয়ামী লীগ) নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে থাকি। আগামী নির্বাচনে জনগণের ভোটে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আবারও শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসবেন।
তিনি বলেন, যারা বঙ্গবন্ধুর খুনি ও স্বাধীনতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধী তাদেরকে বিচার করে বাংলাদেশের মানুষকে কলঙ্কমুক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
লক্ষীপুর-২ আসনের এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাভোকেট নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন বলেন, সরকারি কর্মচারিরা দেশের উন্নয়ন অগ্রগতির ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখে চলছেন। সরকারি কর্মচারিরা সামান্য বেতনে চাকরি করেন। তারপর তারা জীবন বাজি রেখে কাজ করেন। তারা দেশের উন্নয়ন অগ্রগতিতে সহযোগিতা করার পাশাপাশি দেশের দুর্নীতি রোধেও ভূমিকা রাখেন।
বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারি কল্যাণ ফেডারেশনে সভাপতি মো.হেদায়েতুল হোসেনের সভাপতিত্বে কাউন্সিল পরিচালনা করেন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মো.আকতার হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন লক্ষীপুর-২ আসনের এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন, নেত্রকোণা- ৪ আসনের এমপি সাজ্জাদুল হাসান, ময়মনসিংহ -৬ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাভোকেট মোসলেম উদ্দিন, বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারি কল্যাণ ফেডারেশনের প্রধান উপদেষ্টা মো.লুৎফর রহমান খান প্রমূখ।
প্রতি তিন বছর পর পর ফেডারেশনের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। কাউন্সিল শেষে আগামী তিন বছরের জন্য বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটি ও ঢাকা মহানগরের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। এবারে কেন্দ্রীয় কমিটিতে সভাপতি নির্বাচিত হন মো. আকতার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন মুহাম্মদ খলিলুর রহমান ভূইয়া এবং ঢাকা মহানগরের সভাপতি নির্বাচিত হন মো. বাহার উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন আবুল বাসার শরীফ।